প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না।

ভাব-সম্প্রসারণ: খাদ্য গ্রহণ করে, শারীরিকভাবে বাড়ে আর বংশ বৃদ্ধি করে – মোটামুটি এসব বৈশিষ্ট্য থাকলে কোনো কিছুর প্রাণ আছে বলে মনে করা হয়। মানুষেরও প্রাণ আছে, কিন্তু মানুষের থাকে এর অতিরিক্ত আর একটি সত্তা, তা হলো মন।

মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব সেরা প্রাণী। মূল কারণ তার মন আছে। এই মনের মাধ্যমে মানুষ তার চারপাশের জগতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলে। তার মধ্যে ভালো-মন্দের ধারণা সৃষ্টি করে, নৈতিকতার জন্ম দেয়। এমনকি এই মন দিয়ে সে গড়ে তোলে তার নিজস্ব সংস্কৃতি। এই সাংস্কৃতিক বোধ থেকে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক উপাদান। মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে এইসব উপাদান থাকে না। ইতর প্রাণীর মন থাকে না বলে তার সংস্কৃতি নেই, তার ভালো-মন্দের বোধ নেই, তার নৈতিকতার বালাই নেই। মানুষের মন এভাবে অন্যান্য প্রাণী থেকে তাকে আলাদা করে। মনকে আবার অনেক সময়ে ভালো কিছুর কেন্দ্র হিসেবেও ভাবা হয়। যেমন, যখন কোনো ব্যক্তির দানশীলতার কথা বলা হয়, তখন বলা হয়, তাঁর মন আছে। আবার কোনো লোককে যখন চরম স্বার্থপর ও কৃপণ হিসেবে চিত্রিত করার দরকার হয়, তখন বলা হয়, লোকটার মন ছোটো। এদিক দিয়ে মন হলো মানুষের ভালো-মন্দ পরিমাপের এক ধরনের মাপকাঠি।

মানুষের মন আছে বলেই সে মানবিক গুণের অধিকারী। আর যার মন নেই, অবশ্যই সে ইতর প্রাণীর সঙ্গে তুলনীয়। সেই ইতর প্রাণী হতে পারে চরমভাবে হিংস্র অথবা একান্তই গোবেচারা কোনো পশু, পাখি বা মাছ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *