মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন: জীবন ও সাহিত্যকর্ম
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট লেখক, অনুবাদক এবং প্রকাশক। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী এই সাহিত্যিকের লেখা উপন্যাসগুলো বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তিনি সাহিত্য ও প্রকাশনা জগতে নিজের অনন্য পরিচিতি গড়ে তুলেছেন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের জন্ম ঢাকায়। ছোট থেকেই তার ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ ছিল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক বছর অধ্যয়ন করেন। পরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন, যা তার লেখালেখিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
সাহিত্য কর্ম ও জনপ্রিয়তা
নাজিম উদ্দিনের লেখালেখির শুরুটা হয় ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ কাজ দিয়ে। ইংরেজি ভাষায় তার পারদর্শিতার কারণে বেশ কিছু জনপ্রিয় ইংরেজি উপন্যাস অনুবাদ করেন। এ থেকেই তিনি প্রেরণা নিয়ে নিজস্ব মৌলিক রচনায় প্রবেশ করেন।
তার লেখা প্রথম মৌলিক উপন্যাস ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ মুক্তির পর দ্রুতই পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এই উপন্যাসের জন্য তিনি শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। উপন্যাসটি প্রকাশের পর টেলিভিশন ও ওয়েব ধারাবাহিক নির্মাণের মাধ্যমে আরও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
এরপর তার লেখা থ্রিলার ও রহস্যধর্মী উপন্যাস ‘কন্ট্রাক্ট’, ‘কেউ কেউ কথা রাখে’ সহ আরও অনেকে পাঠকপ্রিয় হয়।
উল্লেখযোগ্য উপন্যাসসমূহ
- রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি
বাংলা সাহিত্যে নতুন ধারা সৃষ্টি করা এই উপন্যাসটি পাঠকদের হৃদয় স্পর্শ করেছে। - কন্ট্রাক্ট
এটি তার জনপ্রিয় থ্রিলার উপন্যাস, যেখানে রহস্য ও উত্তেজনার এক অন্যরকম মিশ্রণ রয়েছে। - কেউ কেউ কথা রাখে
মানুষের জীবনের নানা সত্য ও বিচিত্রতা নিয়ে গড়া আরেকটি সফল রচনা।
প্রকাশনা ও অন্যান্য কার্যক্রম
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাংলাদেশের বাতিঘর প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক। এর মাধ্যমে তিনি নতুন লেখকদের সুযোগ করে দেন এবং মানসম্পন্ন বাংলা সাহিত্য প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
সাহিত্য শৈলী ও প্রভাব
তার সাহিত্য শৈলী বেশ সহজবোধ্য, কিন্তু গভীর। রহস্য ও থ্রিলার উপন্যাসে তিনি গল্প বলার দক্ষতা দেখিয়েছেন যা পাঠকদের চোখ আটকে রাখে। একই সঙ্গে সামাজিক বাস্তবতা ও মানুষের মনের জটিলতা তার লেখায় ফুটে ওঠে।
সমাপ্তি
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাংলা সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। ইংরেজি অনুবাদ থেকে শুরু করে নিজস্ব মৌলিক রচনায় তার অবদান বাংলাদেশের সাহিত্যের জন্য মাইলফলক। আগামী দিনগুলোতে তার সাহিত্য কর্ম আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করা যায়।