🏛 ভ্রমণ প্রতিবেদন: মহাস্থানগড় – প্রসিদ্ধ প্রাচীন নগরী
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের গর্ব মহাস্থানগড়, প্রাচীন পুণ্ড্রনগরের রাজধানী হিসেবে ইতিহাসে সুপরিচিত। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে শুরু করে মধ্যযুগ পর্যন্ত এটি ছিলো রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র। এখন এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর একটি।
কোথায়
মহাস্থানগড় অবস্থিত বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে এই নগরীর অবস্থান।
কেন যাবেন
- বাংলাদেশের প্রাচীনতম নগরীর ইতিহাস ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ
- প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ভগ্নাবশেষ সরাসরি চোখে দেখার অভিজ্ঞতা
- মহাস্থানগড় জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রাচীন ভাস্কর্য, শিলালিপি ও নিদর্শন দেখার সুযোগ
- ছাত্রছাত্রী, গবেষক এবং ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য অমূল্য ভ্রমণ
কখন যাবেন
শীতকাল (নভেম্বর থেকে মার্চ) ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। গরমকালে তীব্র রোদে ভ্রমণ কিছুটা কষ্টকর হতে পারে।
কীভাবে যাবেন (রুট)
- ঢাকা থেকে বগুড়া – বাসে (সায়দাবাদ, গাবতলী থেকে বাস পাওয়া যায়, ৪.৫–৫.৫ ঘন্টা)
- বগুড়া শহর থেকে মহাস্থানগড় – সিএনজি/অটোরিকশা/প্রাইভেট কারে প্রায় ১৩ কিমি দূরত্ব, সময় লাগবে ৩০–৪০ মিনিট।
কী দেখবেন
- মহাস্থানগড় দুর্গপ্রাচীর
- ভাসু বিহার, গোকুল মেধ, খোদার পাথর ভাণ্ডার
- বেহুলার বাসরঘর
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
- প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ ও খালবিল
খরচ
- প্রবেশমূল্য: দেশি পর্যটক – ২০ টাকা, বিদেশি – ২০০ টাকা (প্রায়)
- জাদুঘর টিকিট: আলাদা টিকিট লাগতে পারে
- যাতায়াত: ঢাকা–বগুড়া বাস ভাড়া ৬০০–১০০০ টাকা (নির্ভর করবে বাসের ধরন অনুযায়ী)
- স্থানীয় পরিবহন: সিএনজি/অটো ২০০–৪০০ টাকা
পরিবহন
- ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি বগুড়ায় বাস যায়।
- বগুড়া শহর থেকে রিকশা, সিএনজি বা মাইক্রোবাসে যাওয়া যায়।
খাওয়ার ব্যবস্থা
- বগুড়া শহরে বিখ্যাত দই ও বিভিন্ন হোটেলের খাবার উপভোগ করতে পারবেন।
- মহাস্থানগড় এলাকায় ছোটখাটো রেস্টুরেন্ট ও খাবারের দোকানও আছে।
যোগাযোগ
বগুড়ার ট্যুর গাইড সার্ভিস অথবা স্থানীয় সিএনজি চালকদের মাধ্যমেও যোগাযোগ করা যায়।
আবাসন ব্যবস্থা
বগুড়া শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে—
- হোটেল নাজ গার্ডেন
- হোটেল সিভিক ইন
- হোটেল মেলোডি
- স্বল্প খরচে আবাসনও পাওয়া যায়
দৃষ্টি আকর্ষণ
- গাইড নিয়ে ঘুরলে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সম্পর্কে ভালোভাবে জানা যাবে।
- পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন।
সতর্কতা
- প্রত্নস্থানে অযথা কিছু স্পর্শ বা ক্ষতি করবেন না।
- ভীড়ের মধ্যে ব্যক্তিগত সামগ্রী সাবধানে রাখুন।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
- ভাসু বিহার
- গোকুল মেধ (বেহুলার বাসরঘর)
- খোদার পাথর ভাণ্ডার
- ভান্ডারবন বৌদ্ধবিহার
- শালিবাহন রাজার বাড়ি
- শীলাদেবীর ঘাট
টিপস
- সকালে যাত্রা শুরু করলে সহজে সব স্থান ঘুরে দেখা যায়।
- গাইডেড ট্যুরে গেলে প্রতিটি স্থানের গল্প ও ইতিহাস শোনা যাবে।
- গরমকালে টুপি, পানির বোতল সঙ্গে রাখুন।