আলাউদ্দিন আল আজাদ : জীবন ও সাহিত্যকর্ম
🌟 আলাউদ্দিন আল আজাদ : জীবন ও সাহিত্যকর্ম
🎂 জন্ম ও পরিবার
আলাউদ্দিন আল আজাদ জন্মগ্রহণ করেন ৬ মে ১৯৩২ সালে, নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে। তাঁর পিতা গাজী আব্দুস সোবহান এবং মাতা মোসাম্মাৎ আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান।
—
১৯৪৭: মাধ্যমিক পাস (নারায়ণপুর শরাফতউল্লাহ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়)
১৯৪৯: উচ্চ মাধ্যমিক (ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ)
১৯৫৩–৫৪: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা অনার্স ও এমএ
১৯৭০: লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি (গবেষণাবিষয়: ঈশ্বর গুপ্তের জীবন ও কবিতা)
—
👨🏫 কর্মজীবন
নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন
১৯৭৪–৭৫: ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ
১৯৭৬–৮১: মস্কোয় বাংলাদেশ দূতাবাসে শিক্ষায়াটাশে
১৯৮২–৮৯: বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা
পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ছিলেন
—
✍️ সাহিত্যকর্ম
📚 উপন্যাস
তৈশ নম্বর তৈলচিত্র (১৯৬০)
কর্ণফুলী (১৯৬২)
শীতের শেষরাত বসন্তের প্রথম দিন (১৯৬২)
ক্ষুধা ও আশা (১৯৬৪)
অন্য আরও উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : মেহেরজান, কাকতাড়ুয়া, আরেক ফাল্গুন
📖 ছোটগল্প
জেগে আছি (১৯৫০)
ধানকন্যা (১৯৫১)
জীবন জমিন (১৯৫০–১৯৮৮)
📜 কবিতা
মানচিত্র (১৯৬১)
ভোরের নদীর মোহনায় জাগরণ (১৯৬২)
লেলিহান পান্ডুলিপি (১৯৭৫)
নিখোঁজ সনেটগুচ্ছ (১৯৮৩)
সাজঘর (১৯৯০)
🎭 নাটক
মরক্কোর যাদুকর (১৯৫৯)
মায়াবী প্রহর (১৯৬৩)
ধন্যবাদ (১৯৬৫)
📝 প্রবন্ধ ও সমালোচনা
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিশু-কিশোর মনস্তত্ত্বভিত্তিক প্রবন্ধ ও গবেষণা রচনা করেছেন
—
🧠 সাহিত্যশৈলী ও বৈশিষ্ট্য
তাঁর লেখায় বাস্তবতা, সমাজ সচেতনতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রকাশ স্পষ্ট
ভাষা ছিল সহজ, প্রাঞ্জল ও বাস্তবধর্মী
বাংলা ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতিফলন রয়েছে তাঁর লেখায়
—
🏅 পুরস্কার ও সম্মাননা
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৪)
ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫)
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৭১)
একুশে পদক (১৯৮৬)
আবুল কালাম শামসুদ্দীন পুরস্কার (১৯৮৩)
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ পদক (১৯৯৪)
—
🕊️ মৃত্যু
আলাউদ্দিন আল আজাদ ৩ জুলাই ২০০৯ সালে ঢাকার উত্তরার নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
—
🔚 উপসংহার
আলাউদ্দিন আল আজাদ ছিলেন একজন প্রগাঢ় সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ। উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, নাটক ও প্রবন্ধ—সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তাঁর অবদান বাংলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ ও জীবনঘনিষ্ঠ। সাহিত্যে তাঁর সংগ্রামী ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আজও পাঠকের হৃদয়ে অনুরণিত হয়।