তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান পাঠ: মাটি – প্রশ্নোত্তরসহ
তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর : মাটি হলো পৃথিবীর উপরি ভাগের নরম আবরণ। মাটিতে বিভিন্ন উদ্ভিদ জন্মায়। মাটিতে মানুষ চাষাবাদ করে। মাটির উপর মানুষ ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করে। তাছাড়া অসংখ্য প্রাণীর আবাসস্থল হলো মাটি। মাটি হলো পৃথিবীর উপরের স্তর, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠকে ঢেকে রেখেছে। বিভিন্ন বস্তু দিয়ে মাটি গঠিত। এসব উপাদানের ভিন্নতার কারণে মাটি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে।
পূর্বের পরীক্ষাটি থেকে মাটি কী কী বস্তু দিয়ে গঠিত, সে সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই। যেমন- মাটি নুড়িপাথর, বালু, পলি, কাদা, পানি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। এছাড়া উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃতদেহ পচে মাটিতে মিশে যায়। পচে যাওয়া প্রাণির দেহকে বলা হয় হিউমাস। হিউমাস সাধারণত কালো বা গাঢ় রঙের হয়। হিউমাস গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
১। শূন্যস্থান পূরণ করি।
ক) বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে মাটি গঠিত।
খ) দোআঁশ মাটির রঙ ছাই।
গ) বেলে মাটির পানিধারণ ক্ষমতা কম।
ঘ) এঁটেল মাটির পানিধারণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।
ঙ) বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা দোআঁশ মাটি দিয়ে গঠিত।
২। নিচের ডান পাশের বাক্যাংশের সাথে বাম পাশের বাক্যাংশ মিল করি।
বালু, পলি, কাদা, পানি, বায়ু হলো—মাটির উপাদান
বেলে মাটির মধ্য দিয়ে—পানি দ্রুত চলে যেতে পারে।
এঁটেল মাটিতে—শিম এবং কাঁঠাল ভালো জন্মে
বেলে মাটিতে—পানি দ্রুত চলে যেতে পারে।
৩. সঠিক উত্তরে টিক (√) চিহ্ন দিই।
১। এঁটেল মাটিতে কোন কোন ফসল ভালো জন্মে?
ক) চিনাবাদাম, শিম
খ) খিরা, শসা
গ) শিম, কাঠাল√
ঘ) ধান, গম
২। নিচের কোনটি দোআঁশ মাটির বৈশিষ্ট্য?
ক) মাটি কণা সবচেয়ে ছোটো ও ধূসর রঙের
খ) মাটির কণাগুলো বিভিন্ন আকারের ও কালো রঙের√
গ) মাটির কণাগুলো সবচেয়ে ছোট ও লালচে রঙের
ঘ) মাটির কণাগুলো বড় বড় ও কালো রঙের
৩। মাটির পানিধারণ ক্ষমতা নিচের কোন বৈশিষ্ট্যর উপর নির্ভরশীল?
ক) মাটি কণার আকার√
খ) মাটি কণার রঙ
গ) মাটি শক্ত বা নরম
ঘ) মাটি শুকনা ও নরম
৪। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
ক) মাটির উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর: মাটির বিভিন্ন উপাদানগুলো হচ্ছে- বালু, কাদা, পানি, নুরি পাথর এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর পঁচা অংশ।
খ) দোআঁশ মাটিতে কোন কোন ফসল ভালো জন্মে?
উত্তর: দোআঁশ মাটিতে ধান, গম, সবজি (টমেটো, আলু, গাজর), সরিষা, তামাক ইত্যাদি ফসল ভালো জন্মে?
গ) আমরা কী কী কাজে মাটি ব্যবহার করে থাকি?
উত্তর: মাটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
• কৃষিকাজে (ফসল ও উদ্ভিদ উৎপাদনে)
• বাড়ি-ঘর ও রাস্তা নির্মাণে
• মাটির হাঁড়ি, কলস, ইট ও টাইলস তৈরিতে
• ফুলের টব ও বিভিন্ন শৈল্পিক সামগ্রী তৈরিতে
৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
৫। বর্ণনামূলক প্রশ্ন
ক) দোআঁশ মাটির চারটি বৈশিষ্ট্য লিখি।
উত্তর: দোআঁশ মাটির প্রধান চারটি বৈশিষ্ট্য হলো:
• এটি বেশি পানি ধরে রাখতে পারে, যা উদ্ভিদের জন্য উপকারী।
• দোআঁশ মাটিতে বেলে কণার উপস্থিতির কারণে শিকড়ের জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস চলাচল করতে পারে।
• দোআঁশ মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি ফসলের জন্য উর্বর এবং পুষ্টিকর।
• দোআঁশ মাটির মিশ্রিত গঠন কৃষিকাজের জন্য আদর্শ, কারণ এটি সহজেই চাষযোগ্য এবং পানি ও পুষ্টি শোষণে সক্ষম।
খ) সুন্দর এবং দুষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে মাটির ভূমিকা বর্ণনা করি।
উত্তর: মাটি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দর ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে মাটির ভূমিকা অপরিসীম। গাছপালা ও ফসল জন্মানোর মাধ্যমে মাটি অক্সিজেন উৎপাদনে সাহায্য করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে পরিবেশ বিশুদ্ধ রাখে। মাটি বৃষ্টির পানি শোষণ করে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বাড়ায় এবং অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ভূমিধস প্রতিরোধ করে। মাটির মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু বিভিন্ন জৈব বর্জ্য পচিয়ে পরিবেশকে পরিষ্কার রাখে। এছাড়াও গাছপালার মাধ্যমে মাটি ধুলো ও দূষিত গ্যাস শোষণ করে বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে।
(গ) কেন এঁটেল মাটির পানিধারণ ক্ষমতা বেলে মাটির চেয়ে বেশি?
উত্তর: এঁটেল মাটির পানিধারণ ক্ষমতা বেলে মাটির তুলনায় বেশি হওয়ার প্রধান কারণ হলো কণার আকার ও বিন্যাস। এঁটেল মাটির কণাগুলো খুব ছোট হয় এবং পরস্পরের সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত থাকে, যার ফলে পানি সহজে বের হতে পারে না। এঁটেল মাটিতে উচ্চ পরিমাণে কাদা জাতীয় উপাদান থাকে, যা পানি শোষণ করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে ধরে রাখে। বেলে মাটির কণা অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় এর ছিদ্র বেশি থাকে, ফলে পানি সহজেই বেরিয়ে যায়, কিন্তু এঁটেল মাটির ছিদ্র ছোট থাকায় পানি দীর্ঘসময় মাটির মধ্যে ধরে থাকে। ফলে, এঁটেল মাটি বেলে মাটির তুলনায় বেশি পানি ধরে রাখতে পারে এবং এটি ফসলের জন্য আদর্শ হলেও অতিরিক্ত পানি জমে গেলে শিকড় পচে যেতে
🧱 পাঠ: মাটি
বিষয়: তৃতীয় শ্রেণি, বিজ্ঞান
📝 প্রশ্নোত্তর
🔹 ১. মাটি কী?
উত্তর:
মাটি হলো পৃথিবীর উপরিভাগে থাকা এক ধরনের প্রাকৃতিক বস্তু, যা পাথর, পানি, বায়ু ও জীবজন্তুর অবশেষ দিয়ে তৈরি হয়।
🔹 ২. মাটি কীভাবে তৈরি হয়?
উত্তর:
পাথর ভেঙে, রোদ, বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে অনেক দিন পরে ছোট ছোট কণায় পরিণত হয়ে মাটি তৈরি হয়।
🔹 ৩. কয় ধরনের মাটি আছে?
উত্তর:
তিন ধরনের মাটি আছে:
- বেলে মাটি
- দোঁআঁশ মাটি
- কাঁদামাটি
🔹 ৪. বেলে মাটির বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর:
বেলে মাটি হালকা ও ঝুরঝুরে হয়। এতে পানি ধরে রাখতে পারে না।
🔹 ৫. কাঁদামাটির বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর:
কাঁদামাটি নরম ও আঠালো হয়। এটি পানি বেশি ধরে রাখতে পারে।
🔹 ৬. দোঁআঁশ মাটির বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর:
দোঁআঁশ মাটিতে বালি ও কাদা দুই-ই মিশ্রিত থাকে। এতে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা ভালো। চাষের জন্য এটি সবচেয়ে ভালো মাটি।
🔹 ৭. কোন মাটি চাষের জন্য ভালো?
উত্তর:
দোঁআঁশ মাটি চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো।
🔹 ৮. মাটিতে কী কী থাকে?
উত্তর:
মাটিতে বালি, কাদা, পানি, বাতাস, ছোট পাথর, জীবাণু ও পচা গাছপালা থাকে।
🔹 ৯. মাটির ব্যবহার কী কী?
উত্তর:
মাটি দিয়ে আমরা—
- গাছ লাগাই
- বাড়ি বানাই
- খেলনা তৈরি করি
- হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করি
🔹 ১০. কোন কোন জিনিস মাটি থেকে পাওয়া যায়?
উত্তর:
ইট, সিমেন্ট, চীনামাটির বাসন, টালি, খালি হাঁড়ি ইত্যাদি মাটি থেকে তৈরি হয়।
✅ অতিরিক্ত (বুদ্ধিমত্তা যাচাই প্রশ্ন)
🔸 ১১. কোন মাটিতে পানি সবচেয়ে বেশি থাকে?
উত্তর:
কাঁদামাটিতে পানি সবচেয়ে বেশি থাকে।
🔸 ১২. তুমি যদি গাছ লাগাতে চাও, কোন মাটি ব্যবহার করবে? কেন?
উত্তর:
আমি দোঁআঁশ মাটি ব্যবহার করব, কারণ এতে পানি ও প্রয়োজনীয় খাদ্য থাকে যা গাছের জন্য ভালো।
https://www.munshiacademy.com/তৃতীয়-শ্রেণির-বিজ্ঞান-প/