আমিয়াখুম–নাফাখুম ট্রেক গাইড: গহীন অরণ্যে অ্যাডভেঞ্চারের চূড়া

Spread the love

🌊 আমিয়াখুম–নাফাখুম ট্রেক গাইড: গহীন অরণ্যে অ্যাডভেঞ্চারের চূড়া

 

ভেলাখাল ঝিরিপথ-থানচি, বান্দরবান
ভেলাখাল ঝিরিপথ-থানচি, বান্দরবান

স্থান: থানচি উপজেলা, বান্দরবান জেলা, বাংলাদেশ
বিষয়বস্তু: ট্রেকিং | ঝরনা | পাহাড়ি খুম | অরণ্য অভিযান | অ্যাডভেঞ্চার

📍 আমিয়াখুম ও নাফাখুম কোথায়?

নাফাখুমআমিয়াখুম বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় অবস্থিত দুটি অত্যাশ্চর্য পাহাড়ি ঝরনা ও খুম।

  • নাফাখুম হলো শঙ্খু নদীর উপনদী রেমাক্রি খালের উপর একটি জলপ্রপাত।
  • আমিয়াখুম–বহুদূরের গহীন অরণ্যে, বাটিপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে ট্রেক করে পৌঁছাতে হয়।

🧭 কেন যাবেন আমিয়াখুম–নাফাখুমে?

  • দেশের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও চ্যালেঞ্জিং ট্রেকিং রুট
  • ঝরনার গর্জন, খুমের শান্ত জল, গভীর অরণ্য—সব একসাথে
  • একাধিক খুম (প্রাকৃতিক জলাশয়), গুহা, পাথুরে নদীপথ
  • আদিবাসী সংস্কৃতি ও দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ি জনপদ
  • নিঃসঙ্গতা, নীরবতা ও প্রকৃতির আসল রূপের সাক্ষাৎ

🌟 জনপ্রিয় হওয়ার কারণ

  • অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের স্বপ্নের গন্তব্য
  • রেমাক্রি ঝিরিপথে নৌকাভ্রমণ + পাহাড়ি ট্রেইলে হাইক
  • থাইল্যান্ড/ইন্দোনেশিয়ার মতো দৃশ্যপট, কিন্তু বাংলাদেশের বুকে
  • ‘নাফাখুম’–বাংলাদেশের ‘মিনি নায়াগ্রা’ বলে পরিচিত
  • বন, নদী ও পাথুরে প্রাকৃতিক খুমের বিস্ময়

📅 ভ্রমণের সেরা সময়

  • উপযুক্ত সময়: অক্টোবর – মার্চ (শুষ্ক মৌসুম)
  • বর্ষায় (জুলাই–সেপ্টেম্বর): পানি বেশি থাকলেও ট্রেকিং ঝুঁকিপূর্ণ
  • শীতে পথ পরিষ্কার, ট্রেকিং তুলনামূলক সহজ

👀 কী দেখবেন?

  • নাফাখুম ঝরনা – প্রশস্ত ঝরনা, জলগর্জন ও পাথরঘেরা নদী
  • আমিয়াখুম খুম – সবুজ জলে ঘেরা গিরিখাতের মাঝে প্রাকৃতিক পুল
  • নাকটেক ঝরনা, রিজুক ঝরনা, সাতভাই খুম
  • ভেলাখাল ঝিরি, ওয়াচ্ছাপাড়ার প্রাকৃতিক পথ
  • বাটিপাড়া – আদিবাসীদের নিরিবিলি গ্রাম

💰 আনুমানিক খরচ

বিষয় খরচ (টাকা)
বান্দরবান → থানচি (চান্দের গাড়ি) ৪০০–৫০০
থানচি → রেমাক্রি (নৌকা ভাড়া) ৭০০–১২০০ (শেয়ার্ড)
রেমাক্রি → আমিয়াখুম (গাইড+ট্রেক) ৫০০–৮০০
হোমস্টে / থাকার ব্যবস্থা ৩০০–৫০০ (প্রতি রাত)
খাবার (দিনপ্রতি) ২০০–৩০০
মোট ট্রিপ বাজেট প্রায় ৩৫০০–৫৫০০ টাকা (২–৩ দিনের জন্য)

🚍 কিভাবে যাবেন?

  1. ঢাকা → বান্দরবান: সরাসরি বাসে (৮–১০ ঘণ্টা)
  2. বান্দরবান → থানচি: চান্দের গাড়িতে (৭–৮ ঘণ্টা)
  3. থানচি → রেমাক্রি: নৌকায় ১.৫–২ ঘণ্টা
  4. রেমাক্রি → আমিয়াখুম (নাফাখুম হয়ে): ট্রেকিং ৫–৬ ঘণ্টা, স্থানীয় গাইড প্রয়োজন

🍽️ খাওয়ার ব্যবস্থা

প্রত্যন্ত গ্রাম ও বাজারে সীমিত খাবার পাওয়া যায়।

খাবারের ধরন:

  • পাহাড়ি ভাত, ডাল, ডিম/মুরগি
  • বাঁশে রান্না করা খাবার (বাটিপাড়ায় প্রি-অর্ডারে পাওয়া যায়)
  • শুকনো খাবার (চিপস, বিস্কুট, চকলেট) আগে থেকেই সঙ্গে রাখুন

🏨 আবাসনের ব্যবস্থা

রেমাক্রি, থানচি ও বাটিপাড়ায় রয়েছে হোমস্টে/গেস্টহাউজ।

নিরাপদ থাকার জায়গা:

  • রেমাক্রি হোমস্টে
  • বাটিপাড়া গাইড হাউজ
  • থানচি বাজার গেস্টহাউজ
    (গাইডদের মাধ্যমে বুকিং নিশ্চিত করুন)

🗺️ আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

  • সাতভাই খুম – আমিয়াখুম থেকে ট্রেক করে যেতে হয়
  • ভেলাখাল ঝিরিপথ – অ্যাডভেঞ্চার ও নৌকা যাত্রা
  • বাটিপাড়া ও ওয়াচ্ছাপাড়া – পাহাড়ি জীবন
  • রেমাক্রি খাল – স্বচ্ছ জলধারা ও পাথরের বিছানা
  • থানচি বাঁশের সাঁকো – রাতের বাজার ভ্রমণের জন্য

✅ ট্রেকিং টিপস

  • গাইড ছাড়া যাওয়া নিষেধ এবং বিপজ্জনক – স্থানীয় গাইড আবশ্যক
  • সেনা চেকপোস্টে আইডি দেখিয়ে অনুমতি নিতে হয়
  • হালকা ট্রেকিং ব্যাগ, শক্ত গ্রিপের জুতা ও রেইনকোট সঙ্গে রাখুন
  • মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই – Power Bank ও জরুরি ওষুধ সঙ্গে নিন
  • পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন, জলপথ ও খুমে প্লাস্টিক ফেলবেন না
  • ভিজে কাপড় শুকানোর ব্যবস্থা না থাকলে অতিরিক্ত কাপড় রাখুন

🔚 উপসংহার

আমিয়াখুম–নাফাখুম কেবল দুইটি দর্শনীয় স্থান নয়—এগুলো হলো অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের পরিপূর্ণ ট্রেকিং অভিজ্ঞতার প্রতীক। পাহাড়, ঝরনা, নদী, অরণ্য, জনপদ—সব মিলিয়ে এটি এক মহাকাব্যিক অভিযাত্রা। প্রকৃতির সবচেয়ে গহীন সৌন্দর্য দেখতে চাইলে এই পথে একবার পা ফেলতেই হবে।

📢 আপনার শরীর ক্লান্ত হতে পারে, কিন্তু মন বলবে—এই পথই ছিল প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর আহ্বান। 🌿🌊⛰️

আরও পড়ুন:
👉 থানচি বাজার: ট্রেকিংয়ের প্রবেশদ্বার
👉 রুমা বাজার: বগা লেকের পথে
👉 তাজিংডং: বাংলাদেশের ছাদ জয় করুন


🔗 ভিজিট করুন 👉 munshiacademy.com – ঘরে বসে ঘুরে আসুন প্রকৃতি আর জ্ঞানের রাজ্যে।

https://www.munshiacademy.com/আমিয়াখুম-নাফাখুম-ট্রেক/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *