উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে-বুঝিয়ে লিখ

“উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে।” — এই বাক্যটির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, উপসর্গ স্বতন্ত্রভাবে কোনো পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে না, অর্থাৎ একা একা এটি কোনো নির্দিষ্ট অর্থবোধক শব্দ নয়। এটি এমন কোনো শব্দ নয় যা একা ব্যবহার করলে কোনো বস্তুর নাম, ক্রিয়া, গুণ, অবস্থা বা কাজকে বোঝায়। তাই বলা হয়, উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই।
কিন্তু উপসর্গ যখন কোনো মূল শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়, তখন মূল শব্দের অর্থে একটি নতুন রূপ বা তাৎপর্য এনে দেয়। সে ক্ষেত্রে এটি মূল শব্দের সঙ্গে মিশে নতুন অর্থ প্রকাশ করে বা সেই অর্থে একটি বিশেষ দ্যোতনা সৃষ্টি করে। যেমন, “সুখ” একটি স্বাধীন অর্থবোধক শব্দ, যার অর্থ আনন্দ। কিন্তু “অ” উপসর্গ যুক্ত করে “অসুখ” বললে সেটি হয়ে যায় “রোগ” বা “দুঃখ” – অর্থাৎ বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে। এখানে ‘অ’ নিজে কোনো পূর্ণার্থ প্রকাশ করেনি, তবে “সুখ”-এর অর্থকে পরিবর্তন করে একটি নতুন অর্থ সৃষ্টি করেছে।
তাই বলা হয়, উপসর্গের অর্থদ্যোতকতা আছে – কারণ এটি অন্য শব্দের অর্থকে দ্যোতিত করে, অর্থাৎ আভাস বা ভাবের দিক থেকে অর্থের পরিবর্তন ঘটায়। এই কারণেই উপসর্গকে অর্থপ্রকাশের সহায়ক উপাদান হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু একে কোনো পূর্ণ শব্দ ধরা হয় না। এটি ব্যাকরণিক গঠনে অর্থের দ্যোতনা আনে, নিজে অর্থবাচক না হয়েও।
https://www.munshiacademy.com/উপসর্গের-অর্থবাচকতা-নেই/