লোভী বিড়ালের শিক্ষা | বিড়াল ডাক্তার | ঈশপের নীতিকথা | Biral Dakter | Isoper Golpo

🐱 লোভী বিড়ালের শিক্ষা
এক গ্রামে বাস করত এক চতুর ও লোভী বিড়াল।
সে ছিল এতটাই ধূর্ত, যে তার খালি পেটে কিছু গেলেই তাকে ঠেকানো দায়!
একদিন গ্রামের পাশের একটি বনে বসবাসরত পাখিদের দিকে নজর পড়ল তার। বনের ডালে ডালে ছিল কত রঙিন পাখি—কেউ গাইছে, কেউ বাসা বানাচ্ছে।
আর বিড়ালের চোখে তারা সব ছিল শুধু “খাবার”!
কিন্তু এরা ছিল সাবধান। পাখিরা জানত, বিড়াল মানেই বিপদ।
তাই তারা বিড়ালের দেখা পেলেই চিৎকার করে উড়ে পালাত।
বিড়াল ভাবল,
— এইভাবে তো কিছুই হবে না। এক কাজ করি—ডাক্তার সেজে পাখিদের কাছে যাই!
আমি হব “বিড়াল ডাক্তার”! সবাই আমার কথা বিশ্বাস করবে, আর আমি… খেয়ে নেব!
সেইমতো সে একটা ব্যাগে কিছু শুকনো পাতা, গাছের বাকল আর নকল ওষুধ ভরে নিল। গলায় একটা শাল জড়িয়ে, মুখে গাম্ভীর্য এনে হাঁটা দিল পাখিদের বনের দিকে।
এক গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বিড়াল ডাক্তার বলল—
— ওরে আমার প্রিয় পাখিরা! আমি এখন থেকে তোমাদের ডাক্তার! তোমরা কেউ অসুস্থ হলে ভয় পেয়ো না। আমার কাছে এসো, আমি ভালো করে দেখব, ওষুধ দেব।
পাখিরা চমকে গেল।
একটা তোতা নিচে তাকিয়ে বলল—
— হ্যাঁ গো! তুমি তো বিড়াল! তুমি আমাদের খাবে না তো?
বিড়াল গম্ভীর মুখে বলল—
— না না, আমি এখন বদলে গেছি। আমি এখন ভেগান! মানে নিরামিষভোজী। আমি চিকিৎসক, ভালোবাসি প্রাণ বাঁচাতে।
পাখিরা সন্দেহ করলেও কিছু পাখি নিচে নামতে শুরু করল।
এমন সময়, বিড়াল একটু উত্তেজিত হয়ে বলে ফেলল—
— এসো এসো! আমার ওষুধ তো খুব কার্যকর! গিলে ফেললেই—মানে… গিলে দিলে… ঠিক হয়ে যাবে!
😲 কথা ফসকে গেল! “গিলে ফেললেই”— বলেই বুঝে গেল, মুশকিল হয়ে গেছে!
পাখিরা তখন চিৎকার করে উঠল—
— এই যে! সত্যি বলেই ফেলেছ! তুমি আমাদের গিলতে চাও! তুমি মিথ্যেবাদী!
সব পাখি একসাথে তীব্র কণ্ঠে চিৎকার করে আক্রমণ করল।
চড়াই, টিয়া, কাঠঠোকরা, ময়না—সব মিলিয়ে বিড়ালের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। কেউ ঠোকর দিচ্ছে, কেউ ডানা দিয়ে মারছে।
বিড়াল ব্যাগ ফেলে কোনোমতে দৌড়ে পালাল!
আর সে কখনও আর বনের ধারেও ঘেঁষেনি।
📜 নীতিকথা
👉 চতুরতা ও ছলনা দিয়ে সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না।
👉 মিথ্যা ভাষণ বেশিক্ষণ টিকতে পারে না।
👉 প্রতারক নিজেই একদিন প্রতারিত হয়।