সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সোনার তরী কবিতার ব্যাখ্যা

Spread the love

সোনার তরী কবিতার ব্যাখ্যা

সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “সোনার তরী” কবিতার উপর ভিত্তি করে একটি তথ্যবহুল, এইচএসসি পরীক্ষার উপযোগী প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হলো। এতে পাঠপরিচিতি, লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ, চুম্বক তথ্য, ব্যাখ্যা এবং ২০টি জ্ঞানমূলক, ২০টি অনুধাবনমূলক ও ৩টি সৃজনশীল প্রশ্ন সংযুক্ত করা হয়েছে।

📖 পাঠপরিচিতি: সোনার তরী

  • কবিতার নাম: সোনার তরী
  • কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • কাব্যগ্রন্থ: সোনার তরী (১৮৯৪)
  • রচনাকাল: ফাল্গুন ১২৯৮ বঙ্গাব্দ
  • রচনাস্থান: শিলাইদহ কুঠিবাড়ি
  • ছন্দ: মাত্রাবৃত্ত (৮ মাত্রার পূর্ণ পর্ব, ৫ মাত্রার অপূর্ণ পর্ব)
  • প্রকাশকাল: ১৮৯৪

 

✍️ লেখক পরিচিতি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  • জন্ম: ৭ মে ১৮৬১, কলকাতা
  • মৃত্যু: ৭ আগস্ট ১৯৪১
  • উপাধি: কবিগুরু, বিশ্বকবি
  • বিশেষ অবদান: গীতাঞ্জলি (নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত), সোনার তরী, মানসী, গীতবিতান, গোরা, ঘরে বাইরে, চিত্রাঙ্গদা প্রভৃতি।
  • নোবেল পুরস্কার: ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

📚 শব্দার্থ

শব্দ অর্থ
গগনে আকাশে
গরজে গর্জন করে
বরষা বৃষ্টি
ক্ষুরধারা ধারালো ধারাযুক্ত
খরপরশা তীব্র স্পর্শকারী
তরুছায়ামসীমাখা গাছের ছায়ায় আবৃত
তরণী নৌকা
থরে বিথরে সুশৃঙ্খলভাবে

🌟 চুম্বক তথ্য

  • প্রকাশকাল: ১৮৯৪ সালে প্রকাশিত।
  • প্রকাশনা: ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের নামকবিতা।
  • প্রেক্ষাপট: শিলাইদহে অবস্থানকালে রচিত।
  • মূলভাব: জীবনের অর্জন ও ত্যাগের প্রতিফলন।
  • প্রতীক: ‘সোনার তরী’ জীবনের সমাপ্তি ও আত্মসমর্পণের প্রতীক।

 

📜 কবিতার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও মূলভাব

🖋️ ভূমিকা:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “সোনার তরী” বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ প্রতীকী কবিতা, যেখানে তিনি সময়, জীবন, আত্মত্যাগ, ও অস্তিত্বের শূন্যতা—এই সমস্ত চিরন্তন মানবিক অনুভবকে গভীর দার্শনিক আঙ্গিকে প্রকাশ করেছেন। কবিতাটি ১৩০৫ বঙ্গাব্দে শিলাইদহের পদ্মানদীতে, ‘বোট’ বা নৌকার উপর বসেই রচিত, যা কবিতার আবহে বাস্তবিক একটি ব্যঞ্জনা যোগ করেছে।

📘 ১ম স্তবক ব্যাখ্যা:

“গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা…”
কবির একাকীত্ব ও উদ্বেগপূর্ণ মানসিক অবস্থা প্রতিফলিত হয়েছে এখানে। চারপাশে ঘন বর্ষা, ভরা নদী, ক্ষুরধারা স্রোত—সবকিছু যেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা ও সময়ের প্রবাহের প্রতীক। ধান কাটা হয়ে গেছে—জীবনের কার্যকলাপ শেষ, এখন অপেক্ষা শুধুই প্রত্যাশিত কোনো আগমনের।

📘 ২য় স্তবক ব্যাখ্যা:

“একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা…”
কবি নিজের জীবনকে ছোট একটি ক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। নিজেকে তিনি কর্মমগ্ন একাকী কর্মী হিসেবে দেখিয়েছেন, যার জীবনের উপার্জন আছে কিন্তু কেউ তা ভাগ নিতে পাশে নেই। তার অবস্থান সীমাবদ্ধ অথচ চারপাশে প্রাণ ও প্রাকৃতিক গতি চলমান।

📘 ৩য় স্তবক ব্যাখ্যা:

“গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে…”
এখানে “তরী” কেবল নৌকা নয়, বরং জীবনের এক মেটাফোর বা প্রতীক। তরীর আগমন যেন ঈশ্বর, নিয়তি কিংবা জীবনের অনিবার্যতার আগমন। কবির মনে হয় তিনি তাকে চেনেন, হয়তো তা তাঁর ভবিতব্য, যা এসে তার জীবন ছুঁয়ে চলে যাবে। তরী চোখ ফিরিয়ে চায় না—এ যেন সময়ের নিষ্ঠুরতা ও নীরব অগ্রগতি।

📘 ৪র্থ স্তবক ব্যাখ্যা:

“ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্‌ বিদেশে…”
কবি সেই তরীকে আহ্বান জানাচ্ছেন যেন তার সঞ্চিত ধান (জীবনের সঞ্চয়) নিয়ে যায়। কবির অনুরোধে বোঝা যায়, তিনি সব কিছু দিয়ে দিয়ে মুক্ত হতে চান। এটি আত্মসমর্পণের, আত্মত্যাগের উচ্চতম রূপ—যেখানে তিনি জীবনের সব অর্জন নিঃস্বার্থভাবে দিতে প্রস্তুত।

📘 ৫ম স্তবক ব্যাখ্যা:

“যত চাও তত লও তরণী-‘পরে…”
কবির আত্মত্যাগের গভীরতা এখানে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি অতীতের সব আবেগ, বাসনা, মালিকানা ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত। নিজের সমস্ত সঞ্চয় তরীতে তুলে দেন—এক ধরণের আত্মার শুদ্ধি এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষা এটি। কবি আর কিছু রাখেন না, এমনকি নিজেকেও তুলে দিতে চান।

📘 শেষ স্তবক ব্যাখ্যা:

“ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী…”
শেষে দেখা যায়, কবির সমস্ত সোনার ধান তরীতে উঠলেও তিনি নিজে উঠতে পারেন না। তরীতে তাঁর জন্য কোনো জায়গা নেই। তিনি নদীর তীরে একা পড়ে থাকেন। এটি জীবন ও মৃত্যুর গভীর প্রতীক। যা ছিল তা সব নিয়ে যায় জীবন-তরী, কিন্তু কবি পড়ে থাকেন শূন্যতায়। এক নিঃসঙ্গ পরিণতি, সময়ের কাছে পরাভব।

🌟 মূলভাব:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সোনার তরী’ কবিতাটি প্রতীক ও রূপকের মাধ্যমে জীবনের মর্মবোধকে গভীরভাবে তুলে ধরেছে। কবিতার শুরুতে কবি বর্ষার এক নিঃসঙ্গ প্রাকৃতিক পরিবেশে নিজেকে অবস্থানরত হিসেবে চিত্রায়িত করেছেন। চারদিকে জল, মেঘ, ধানের গাদা ও নদীর ধারাল ধারা—এসব চিত্র কবির নিঃসঙ্গতা ও একাকীত্বের পরিচায়ক। এই অবস্থায় তিনি দেখেন, একটি তরী (নৌকা) গানে গানে বয়ে যাচ্ছে এবং তা তাঁর সমস্ত সঞ্চিত ধান (অর্জন) তুলে নিয়ে চলে যায়। এই তরী যেন জীবনের প্রতীক, যা সময়ের স্রোতে ভেসে চলে যায়, আর কবির ধান মানে তাঁর জীবনভর সংগ্রহ। কবি কোনো আক্ষেপ না রেখে সব দিয়ে দেন—এটি আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত।

এই কবিতায় ‘সোনার তরী’ কেবল বাহন নয়, বরং জীবনের মানে ও মূল্যকে অন্বেষণ করার এক রূপক। তরীতে তাঁর সমস্ত সঞ্চয় তোলা জীবনের প্রতি এক ত্যাগের মনোভাব। আর তরীর চলে যাওয়া জীবনের অনিবার্য সমাপ্তিকে নির্দেশ করে। শেষে কবি শূন্য নদীর তীরে একা পড়ে থাকেন, যা জীবনের শেষ ধাপে নিঃসঙ্গতা ও শূন্যতার বোধকে চিত্রায়িত করে। এইভাবে, কবিতাটি জীবন-তত্ত্ব, আত্মত্যাগ, ক্ষণস্থায়ীত্ব এবং নীরব আত্মসমর্পণের এক অপূর্ব প্রতীকী চিত্র রচনা করে।

 

📘 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন (২০টি)

  1. “সোনার তরী” কবিতার রচয়িতা কে?
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
  2. কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত?
    • সোনার তরী।
  3. কবিতাটি কত সালে রচিত হয়?
    • ফাল্গুন ১২৯৮ বঙ্গাব্দ।
  4. কবিতাটি কোথায় রচিত হয়?
    • শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে।
  5. ‘সোনার তরী’ শব্দটি কী প্রতীক করে?
    • জীবনের সমাপ্তি ও আত্মসমর্পণ।
  6. কবিতায় ‘গগনে গরজে মেঘ’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • আকাশে মেঘের গর্জন।
  7. ‘খরপরশা’ শব্দের অর্থ কী?
    • তীব্র স্পর্শকারী।
  8. ‘তরুছায়ামসীমাখা’ শব্দের অর্থ কী?
    • গাছের ছায়ায় আবৃত।
  9. কবিতায় ‘তরণী’ শব্দটি কী বোঝায়?
    • নৌকা।
  10. ‘থরে বিথরে’ শব্দের অর্থ কী?
    • সুশৃঙ্খলভাবে।
  11. কবিতায় ‘শূন্য নদীর তীরে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
    • জীবনের শূন্যতা ও নিঃসঙ্গতা।
  12. ‘সোনার ধান’ কী প্রতীক করে?
    • জীবনের অর্জন।
  13. ‘ভরা নদী ক্ষুরধারা’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • পানিতে পূর্ণ নদী ধারালো ধারাযুক্ত।
  14. ‘পরপারে দেখি আঁকা’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • নদীর অপর পারে দৃশ্যমান দৃশ্য।
  15. ‘গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • নৌকা বেয়ে গান গাইতে গাইতে কেউ আসছে।
  16. ‘যেয়ো যেথা যেতে চাও’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • তুমি যেখানে যেতে চাও, সেখানে যাও।
  17. ‘শ্রাবণগগন ঘিরে’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • শ্রাবণ মাসের আকাশে মেঘের ঘনত্ব।
  18. ‘সকলি দিলাম তুলে’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • সব কিছু তুলে দিলাম।
  19. ‘এখন আমারে লহ করুণা করে’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • এখন আমাকে করুণা করে গ্রহণ করো।
  20. ‘যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    • সব কিছু নিয়ে সোনার তরী চলে গেল।

 

 

নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কবিতার উপর ভিত্তি করে এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার জন্য উপযোগী ২০টি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন সাজানো হলো। প্রতিটি প্রশ্ন শিক্ষার্থীর বিশ্লেষণী ও ব্যাখ্যামূলক দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য তৈরি।

🧠 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন (২০টি)

  1. কবিতায় বর্ষার প্রাকৃতিক দৃশ্য কীভাবে চিত্রিত হয়েছে?
    👉 মেঘের গর্জন, টানা বর্ষণ, নদীর পূর্ণতা এবং জলখেলায় এক চিত্রময় পরিবেশ গঠিত হয়েছে।
  2. কবিতায় কবির একাকীত্বের অনুভূতি কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
    👉 ‘কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা’ পংক্তিতে একাকীত্ব ও অনিরাপত্তা প্রকাশ পায়।
  3. ‘সোনার ধান’ কী প্রতীক করে?
    👉 এটি মানুষের জীবনের সঞ্চয়, শ্রমফল ও প্রিয় অর্জনের প্রতীক।
  4. ‘তরী’ কবিতায় কী বোঝায়?
    👉 তরী এখানে মৃত্যুর প্রতীক, যা জীবনের অর্জনসমূহ বহন করে অজানায় চলে যায়।
  5. ‘শূন্য নদীর তীরে’ বাক্যটি কী বোঝায়?
    👉 এটি জীবনের শেষে শূন্যতা, নিঃসঙ্গতা ও নির্জন অবস্থার চিত্র তুলে ধরে।
  6. ‘গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে’ — পংক্তিটির তাৎপর্য কী?
    👉 এটি জীবনের হঠাৎ আবির্ভাব বা মৃত্যু-সম্ভাবনার প্রতি এক কাব্যিক ইঙ্গিত।
  7. ‘যেয়ো যেথা যেতে চাও’ — পংক্তিটির তাৎপর্য কী?
    👉 কবি মৃত্যুকে বাধা দেন না; বরং সেটিকে স্বাভাবিক ও অনিবার্য রূপে গ্রহণ করেন।
  8. ‘আমার সোনার ধান কূলেতে এসে’ — এর মধ্যে কী আকুতি প্রকাশ পেয়েছে?
    👉 কবি চান তাঁর জীবনের সমস্ত অর্জন যেন মৃত্যু অর্থাৎ তরীর সঙ্গে অন্তরিত হয়, এতে আত্মত্যাগ ও আবেগ প্রকাশ পায়।
  9. ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’ — বাক্যটির তাৎপর্য কী?
    👉 জীবনের শেষে আশ্রয়হীনতার ভাবনা ও তরীতে আর কিছু বহনের অক্ষমতা প্রকাশ পায়।
  10. ‘সকলি দিলাম তুলে থরে বিথরে’ — কবির এই বাক্যে কী প্রতিফলিত হয়েছে?
    👉 এটি কবির আত্মত্যাগ ও পরিপূর্ণ দানের প্রকাশ — জীবনের সবকিছু দিয়ে দেওয়ার মনোভাব।
  11. ‘চিনি উহারে’ — কবি কেন এমন বলেন?
    👉 এটি এক আত্মিক অনুভব; হয়তো কবি অতীতের কোনো প্রিয় সত্তাকে বা মৃত্যুকে চেনা মনে করেন।
  12. ‘রাশি রাশি ভারা ভারা ধান কাটা হল সারা’ — এই চিত্রের তাৎপর্য কী?
    👉 কৃষকের সফলতা, পরিশ্রম ও জীবনের সম্পন্নতার চিত্র এখানে আঁকা হয়েছে।
  13. ‘ভরা নদী ক্ষুরধারা খরপরশা’ — এর মাধ্যমে কী বোঝানো হয়েছে?
    👉 প্রকৃতির রূপান্তর, ভয়াবহতা এবং জীবনের অনিশ্চয়তা প্রতিফলিত হয়েছে।
  14. ‘এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা’ — এর ব্যঞ্জনা কী?
    👉 এটি মানুষের জীবনের সীমাবদ্ধতা ও নিঃসঙ্গ শ্রমজীবনের প্রতীক।
  15. ‘তরুছায়া মসীমাখা গ্রামখানি মেঘে ঢাকা’ — চিত্রটির গুরুত্ব কী?
    👉 এখানে দূরের গ্রাম ও স্বপ্নময় জীবনের প্রতি এক প্রগাঢ় আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে।
  16. ‘যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী’ — এর তাৎপর্য কী?
    👉 জীবনের সব অর্জন মৃত্যুর সঙ্গে চলে যায়, এই ভাবনাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
  17. ‘এখন আমারে লহ করুণা করে’ — কবি কেন এমন অনুরোধ করেন?
    👉 কবি জীবনের সবকিছু উৎসর্গ করে এখন নিজেকে দয়া বা করুণার জন্য সমর্পণ করেন।
  18. কবিতায় সময় কীভাবে রূপক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে?
    👉 প্রভাত, বর্ষা, নদীর গতি— সবই সময়ের রূপক, যা জীবনের বিভিন্ন পর্ব নির্দেশ করে।
  19. কবিতায় কবির দৃষ্টিভঙ্গি আশাবাদী না নিরাশাবাদী? ব্যাখ্যা করো।
    👉 কবির দৃষ্টিভঙ্গি নিরাসক্ত হলেও বিষণ্ন, ত্যাগময় ও দার্শনিক— একধরনের জীবন-বিমর্শে আশ্রিত।
  20. ‘যারে খুশি তারে দাও’ — এই পংক্তিতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
    👉 এখানে কবির অনাসক্তি ও নিঃস্বার্থতার ভাব প্রকাশ পেয়েছে— তিনি কিছু চাইছেন না, শুধু দান করতে চান।

 

 

নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “সোনার তরী” কবিতার উপর ভিত্তি করে এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার উপযোগী ৫টি সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া হলো। প্রতিটি প্রশ্ন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) নির্ধারিত কাঠামো অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়েছে—উদ্দীপকসহ ক, খ, গ, ঘ উপধারায় বিভক্ত।

🎨 সৃজনশীল প্রশ্ন ১

উদ্দীপক:
রিমা বর্ষাকালে গ্রামের নদীর পাড়ে বসে ধানখেতের দিকে তাকিয়ে ছিল। আকাশে ছিল ঘন মেঘ, নদীর পানি ছিল টইটম্বুর। প্রকৃতির মাঝে নিজেকে নিঃসঙ্গ ও ছোট মনে হচ্ছিল তার।

ক. ‘সোনার তরী’ কবিতাটি কে রচনা করেন?
খ. ‘ঘন বরষা’ কবিতায় কী অর্থ প্রকাশ করে?
গ. উদ্দীপকের প্রেক্ষিতে কবিতায় সময় ও প্রকৃতির রূপ কিভাবে চিত্রায়িত হয়েছে?
ঘ. উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে ব্যক্তির নিঃসঙ্গতার অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করো।

🌾 সৃজনশীল প্রশ্ন ২

উদ্দীপক:
নাহিদা তার ছোট একটুখানি জমিতে পরিশ্রম করে ধান ফলায়। একদিন এক অপরিচিত কৃষক আসে এবং তার কাছ থেকে কিছু ধান নিয়ে যায় বিনিময়ে একটি হাসি দিয়ে।

ক. ‘সোনার ধান’ বলতে কী বোঝায়?
খ. কবিতায় ‘ক্ষণিক হেসে’ বলে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের প্রেক্ষিতে কবিতায় দান ও ত্যাগের চিত্র কিভাবে তুলে ধরা হয়েছে?
ঘ. উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে জীবনের ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩

উদ্দীপক:
নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মিনহা দেখে তার জীবনের যত সংগ্রহ, ত্যাগ ও ভালোবাসা একে একে স্রোতের সঙ্গে দূরে সরে যাচ্ছে। সে অনুভব করে, তার কিছুই আর তার নিজের নেই।

ক. ‘তরী’ শব্দের শাব্দিক অর্থ কী?
খ. কবিতায় তরীতে ঠাঁই না পাওয়ার অর্থ কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের প্রেক্ষিতে কবিতায় জীবনের শূন্যতা কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
ঘ. উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে জীবনের পরিণতি ও বর্জনের দর্শন ব্যাখ্যা করো।

🌟 সৃজনশীল প্রশ্ন ৪

উদ্দীপক:
একদিন হঠাৎ করে নদীতে একটি পালতোলা নৌকা দেখে ফারহানা ভাবলো—সে যেন চেনে মাঝিকে! তার মধ্যে একটা অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করছিল।

ক. ‘চিনি উহারে’—উক্তিটি দ্বারা কী বোঝায়?
খ. তরীর গান ও গতি কবিতায় কী প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের প্রেক্ষিতে কবিতায় চেনা অথচ অচেনা অনুভব কিভাবে প্রকাশিত হয়েছে?
ঘ. উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে সময় ও স্মৃতির মেলবন্ধন বিশ্লেষণ করো।

🕊️ সৃজনশীল প্রশ্ন ৫

উদ্দীপক:
জীবনের শেষপ্রান্তে এসে সুমনা অনুভব করে, তার জীবনের সব অর্জন সে কাউকে দিয়ে দিতে চায়, শুধু চায় একটু ভালোবাসা, একটু করুণা।

ক. ‘করুণা’ শব্দটির মানে কী?
খ. কবিতায় কবি ‘আমারে লহ করুণা করে’ বলে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের প্রেক্ষিতে কবিতায় আত্মসমর্পণ ও প্রত্যাশার মিশ্র অনুভূতি কিভাবে চিত্রিত হয়েছে?
ঘ. উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে মানুষের জীবনে করুণার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ করো।

 

 

https://www.munshiacademy.com/সোনার-তরী-কবিতার-ব্যাখ্য/

আরও বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিয়োদ্বয় দেখুন
https://youtu.be/rsGIaU5eNx0?si=cUB1UfSy76rOFSIo
https://youtu.be/rsGIaU5eNx0?si=X43Icck9yqh9DlyX

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *