🌳 খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান: সিলেটের সবুজ প্রাণের স্বর্গ
সিলেট জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম রত্ন খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৬৭৮.৮০ হেক্টর (১৬৭৭ একর) বিস্তৃত এই বনাঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রাণবৈচিত্র্য এবং পর্যটনের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্যানে রয়েছে প্রায় ২১৭ প্রজাতির গাছ এবং ৮৩ প্রজাতির প্রাণী। গাছপালার মধ্যে প্রধানত সেগুন, ঢাকি জাম, গর্জন, চম্পা, চাপালিশ, মেহগনি, শিমুল, চন্দন, জারুল, আম, জাম, বন বড়ই, জাওয়া, কাইমূলা, পিতরাজ, বট, আমলকি, হরিতকি, বহেড়া, মান্দা, পারুয়া, মিনজিরি, অর্জুন ও একাশিয়ার প্রজাতি পাওয়া যায়। বাঁশ ও বেতের প্রজাতি যেমন—জাইবাশ, বেতুয়া, পেঁচা, পারুয়া, তাল্লাবেত, জালিবেত।
প্রাণীজগতে আছে নানা ধরণের পাখি, যেমন—দোয়েল, ময়না, শ্যামা, কাক, কোকিল, টিয়া, কাঠঠোকরা, মাছরাঙ্গা, চিল, ঘুঘু, বক, টুনটুনি, চড়ুই, বুলবুলি, বনমোরগ, মথুরা, শালিক। স্তন্যপায়ীর মধ্যে রয়েছে বানর, হনুমান, শিয়াল, বনবিড়াল, বেজি, কাঠবিড়াল, ইঁদুর, খরগোশ, মেছোবাঘ। এছাড়াও সাপের মধ্যে অজগর, দারাইশ, উলুপুড়া, চন্দ বুড়া সহ বিভিন্ন বিষধর সাপ দেখা যায়।
উদ্যানটি শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষিত। বনভ্রমণ প্রিয়রা বিভিন্ন ঋতুতেই এখানে আসেন; বর্ষায় কিছু জলপ্রবাহ পেরোতে হয়, শীতে বন পাতাবহুল থাকে এবং সিমেন্ট নির্মিত বসার ছাতা থাকার কারণে ভ্রমণ আরও আনন্দদায়ক হয়। বনের ভেতর হাঁটার সময় প্রকৃতির সবুজ, পাখি-বিড়ালের শব্দ এবং শীতল বাতাস মনকে প্রশান্তি দেয়।
খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, বরং শিশু, যুবক ও প্রাপ্তবয়স্ক সকলের শিক্ষণীয় কেন্দ্র হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
