পর্বত কীভাবে তৈরি হয়েছে
পর্বত হলো পৃথিবীর ভূ-গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত উঁচু ভূমি বা স্থলরাশি। এটি সাধারণত টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষ, উত্তোলন এবং আগ্নেয়গিরির ক্রিয়ার ফলে তৈরি হয়। পৃথিবীর স্থলভাগ বিভিন্ন বড় ও ছোট টেকটনিক প্লেট নিয়ে গঠিত। এই প্লেটগুলো অতি ধীরগতিতে কিন্তু ক্রমাগতভাবে চলে। যখন দুইটি প্লেট মুখোমুখি সংঘর্ষ করে, তখন মাটির উপরের স্তরটি উপরে উঠে যায় এবং লম্বা, উঁচু পর্বত গঠিত হয়। যেমন, হিমালয় পর্বতমালা হলো ভারতীয় প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষের ফল।
এছাড়া কিছু পর্বত অগ্ন্যুত্পাদন বা আগ্নেয়গিরির কার্যক্রমের মাধ্যমে তৈরি হয়। যেমন, যখন মল্ট বা লাভা পৃথিবীর পৃষ্ঠে বের হয়ে জমা হয়, তখন তা স্তর-স্তর করে উঁচু পর্বত গঠন করে। এর সাথে ছাই ও শিলাবস্তুও পর্বতের আকারকে সমৃদ্ধ করে।
পর্বতের আকৃতি শুধু গঠনের প্রক্রিয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকে না। ক্ষয় প্রক্রিয়া—যেমন বরফের গ্লেসিয়ার, নদী ও বৃষ্টির ধারা—ও পর্বতের আকারকে পরিবর্তন করে। দীর্ঘ সময় ধরে, এই প্রাকৃতিক প্রভাব পর্বতের ঢাল, চূড়া ও উপত্যকার রূপ নির্ধারণ করে।
পর্বতের গঠন ও প্রকারভেদে পরিবেশ, জলবায়ু এবং প্রাণীজগৎও প্রভাবিত হয়। উচ্চ পর্বতমালায় বৃষ্টিপাত বেশি হয়, তাপমাত্রা কম থাকে এবং বিশেষ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী বসবাস করে। তাই, পর্বত কেবল ভূ-গঠনগত নয়, বরং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
