হিংস্র চিল ও পায়রার গল্প -ঈশপের গল্প

Spread the love

হিংস্র চিল ও পায়রার গল্প -ঈশপের গল্প

(ঈশপের নীতিকথা অবলম্বনে)

 

 

হিংস্র চিল ও পায়রার গল্প |
হিংস্র চিল ও পায়রার গল্প |

 

একবার এক ঘন সবুজ বনে বাস করত অনেকগুলো পায়রা। তারা দিনভর খেলা করত, ডানায় ডানায় ছুঁয়ে যেত আকাশ। কিন্তু সেই আনন্দের আকাশে একটাই কালো ছায়া—এক হিংস্র চিল।

চিলটি ছিল বনের আতঙ্ক। শিকার না পেলে সে পায়রাদের দিকে হুমকিমুখে তাকিয়ে থাকত। আর পায়রাগুলো? তারা তটস্থ হয়ে থাকত—চিল আক্রমণ করবে কিনা এই ভয়ে। তাই তারা বাসা থেকে খুব একটা বের হতো না। যতটা সম্ভব নিরবে দিন কাটাত।

এভাবে চলছিল দিনের পর দিন। একদিন হঠাৎ সেই দুষ্টু চিল একটি বুদ্ধি আঁটল। সে ভাবল, “জোর করে তো এদের খেতে পারছি না। এবার মিষ্টি কথায় ফাঁদ পাতি!”

পরদিন সকালে চিলটি পায়রাদের কাছে গিয়ে কোমল কণ্ঠে বলল,
“ওহে পায়রারা! আর কতদিন তুমি-আমি বিভেদে থাকব? ভুলে যাও পুরোনো কথা। আমি আসলে তোমাদের শত্রু নই—আমি তোমাদের অভিভাবক হতে চাই।”

পায়রারা অবাক হয়ে তাকাল।

চিল আবার বলল,
“তোমরা যদি আমাকে তোমাদের রাজা করে নাও, আমি তোমাদের রক্ষা করব। কেউ যেন তোমাদের কষ্ট না দেয়, তা দেখব আমি নিজে। আমি চাই পায়রাদের সুখ!”

এই মধুর ভাষায় চিল এত সুন্দরভাবে কথা বলল যে, পায়রাদের মনে আর ভয় রইল না। তারা ভাবল, “চল ভালোবাসা দিয়ে শত্রু জয় করি!” সবাই মিলে চিলকে রাজা করে ফেলল—সেই হিংস্র চিলই হলো এখন রাজাধিরাজ চিল বাহাদুর

প্রথম দিন রাজা হয়ে চিল বনে উৎসব ঘোষণা করল। পায়রারা খুব খুশি। কিন্তু পরদিন থেকেই শুরু হলো এক নির্মম খেলা।

প্রতি দিন একটি করে পায়রা উধাও হতে লাগল। কখনো পেছনের ঝোপে, কখনো গাছের মাথা থেকে। কেউ বলল, “বোধহয় হারিয়ে গেছে!”
কিন্তু এক বুড়ো পায়রা ফিসফিস করে বলল, “হারিয়ে নয়… খেয়ে ফেলেছে… আমাদের রাজাই!”

কিছুদিনের মধ্যেই পায়রারা বুঝে গেল—চিলের ‘রক্ষা’ আসলে ছিল ধ্বংসের আরেক নাম। তারা কান্নাজড়িত গলায় বলল,
“আমরা নিজেরাই নিজেকে শেষ করলাম। আমাদের শত্রুকে বিশ্বাস করে তাকে রাজা বানিয়ে দিয়েছি!”

📚 নৈতিক শিক্ষা:

শত্রুর মিষ্টি কথায় ভুলে গেলে তার ফাঁদে পা দিতেই হয়। দুশমন যতই মধুর ভাষায় কথা বলুক, তার হৃদয়ে থাকে হিংস্রতা।

 

গল্প সংশ্লিষ্ট ভিডিয়ো: https://youtu.be/45ZnslJPS3E?si=ELJM_SZv5f8xpFhO

https://youtu.be/45ZnslJPS3E?si=ELJM_SZv5f8xpFhO

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *