সিলেট-এর নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ ও কিংবদন্তি রয়েছে। এর প্রাচীন নাম ছিল শ্রীহট্ট (Srihatta) এবং সুলতানী আমলে এটি
জালালাবাদ নামেও পরিচিত ছিল।
নামকরণের প্রধান মতবাদগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ‘শীলাহাট’ বা ‘শিল হট্’ থেকে: সবচেয়ে প্রচলিত ধারণাগুলোর একটি হলো, এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পাথর বা ‘শিলা’ পাওয়া যেত। প্রাচীন গৌড়ের রাজা গুহক তাঁর কন্যা শীলাদেবীর নামে একটি হাট (বাজার) স্থাপন করেছিলেন, যা থেকে এই অঞ্চলের নাম ‘শীলাহাট’ হয় এবং কালক্রমে তা ‘সিলেট’-এ পরিণত হয়। আরেকটি কিংবদন্তি অনুসারে, ইসলাম প্রচারক হযরত শাহজালাল (র.) যখন এই অঞ্চলে আসেন, তখন রাজা গৌর গোবিন্দ বড় বড় পাথর দিয়ে রাস্তা আটকে দেন। শাহজালাল (র.) অলৌকিক ক্ষমতাবলে পাথরগুলোকে ‘শিল হট্’ (পাথর সরে যাও) বলতেই সেগুলো সরে যায়। এই ‘শিল-হট’ থেকেই ‘সিলেট’ নামের উৎপত্তি হয়।
- ‘শ্রীহট্ট’ থেকে: ঐতিহাসিকদের মতে, প্রাচীনকাল থেকেই এই অঞ্চল ‘শ্রীহট্ট’ নামে পরিচিত ছিল। ইন্দো-আর্য ভাষায় ‘শ্রী’ শব্দের অর্থ সৌন্দর্য বা প্রাচুর্য এবং ‘হট্ট’ শব্দের অর্থ বাজার বা মানব বসতি। অর্থাৎ ‘শ্রীহট্ট’ শব্দের অর্থ ছিল সমৃদ্ধ বা সুন্দর বাজার। এই ‘শ্রীহট্ট’ শব্দটিই ইংরেজিতে ‘Sylhet’ (সিলেট) নামে পরিচিতি লাভ করে।
- ‘শ্রী হাটকেশ্বর’ থেকে: হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী ‘শ্রী শ্রী হাটকেশ্বর’ মহাদেব শিবের অন্যতম নাম। তৎকালীন গৌড়ের রাজারা তাঁর পূজা করতেন এবং অনেকে মনে করেন এই ‘শ্রী হাটকেশ্বর’ থেকেই ‘শ্রীহট্ট’ নামের উৎপত্তি হয়েছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে ‘
শ্রীহট্ট’ শব্দটি উচ্চারণের সুবিধার্থে ইংরেজদের নথিপত্রে ‘সিলাহেট’, ‘সিলহেট’ এবং অবশেষে ‘সিলেট’ (Sylhet) হিসেবে লেখা হতে থাকে এবং এই নামটিই বর্তমানে প্রচলিত।
