সাতভাই খুম ট্রেক গাইড: বান্দরবানের গহীনে জল ও পাথরের অ্যাডভেঞ্চার

Spread the love

🌊 সাতভাই খুম ট্রেক গাইড: বান্দরবানের গহীনে জল ও পাথরের অ্যাডভেঞ্চার

 

স্থান: থানচি উপজেলা, বান্দরবান জেলা, বাংলাদেশ
বিষয়বস্তু: খুম | ঝরনা | ট্রেকিং | অ্যাডভেঞ্চার | অরণ্য | পাহাড়ি গ্রাম

📍 সাতভাই খুম কোথায়?

সাতভাই খুম বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার বাটিপাড়া গ্রামসংলগ্ন একটি অসাধারণ খুম বা প্রাকৃতিক জলাধার। এটি আমিয়াখুম থেকে আরও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ২–৩ ঘণ্টা ট্রেকিং করে পৌঁছাতে হয়।

🧭 কেন যাবেন সাতভাই খুমে?

  • বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্জন, রহস্যময় খুমগুলোর একটি
  • গভীর জঙ্গলের মাঝে একে একে সাতটি খুম বা জলাধারের সমাহার
  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক পাথুরে গিরিখাতের ভেতর দিয়ে নৌকাভ্রমণ
  • অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের আদর্শ গন্তব্য
  • পানির স্বচ্ছতা, খাঁজকাটা পাহাড় আর নিঃশব্দ প্রকৃতি—অসাধারণ অনুভব

🌟 জনপ্রিয় হওয়ার কারণ

  • কেবল সাহসী ট্রেকারদের দেখা সৌন্দর্য – সাধারণ পর্যটকদের পা পড়ে না
  • ট্রেকিং, ঝিরিপথ, বাঁশের ভেলায় যাত্রা—সব একসাথে
  • এখনো ‘আনটাচড’ প্রকৃতি, পর্যটকদের ভিড় নেই
  • ভেলাভ্রমণ ও সাঁতারে একের পর এক খুম পার হওয়ার রোমাঞ্চ

📅 ভ্রমণের সেরা সময়

  • উপযুক্ত সময়: অক্টোবর – মার্চ (শুষ্ক মৌসুম)
  • বর্ষাকাল এড়িয়ে চলুন: নদীপথ ও খুম বিপজ্জনক হয়ে পড়ে
  • শীতে পথ মসৃণ ও নিরাপদ থাকে, পানির স্বচ্ছতা বেশি

👀 কী দেখবেন?

  • সাতটি খুম – একে একে বয়ে চলা জল ও পাথরের রহস্য
  • ঝরনা ও ঝিরিপথ – ছোট ছোট জলপ্রপাত ও পাথুরে খাল
  • গহীন অরণ্য – পাখি, বনজ উদ্ভিদ আর নিঃশব্দ প্রকৃতি
  • ভেলায় খুম ভ্রমণ – বাঁশের তৈরি ভেলা দিয়ে এক খুম থেকে আরেক খুমে যাত্রা
  • গিরিখাতের ভেতর দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ – অসাধারণ দৃশ্য

 

💰 আনুমানিক খরচ

বিষয় খরচ (টাকা)
থানচি → রেমাক্রি (নৌকা) ৭০০–১২০০ (শেয়ার্ড)
রেমাক্রি → আমিয়াখুম → সাতভাই খুম (ট্রেকিং+গাইড) ৬০০–১০০০
হোমস্টে (বাটিপাড়া বা আমিয়াখুমে) ৩০০–৫০০
খাবার (প্রতিদিন) ২০০–৩০০
গাইড/ভেলা ভাড়া ৩০০–৫০০ (গ্রুপভিত্তিক)
ট্রিপ বাজেট (প্রতি ব্যক্তি, ৩ দিনের জন্য) ৪০০০–৬০০০ টাকা

🚍 কিভাবে যাবেন?

  1. ঢাকা → বান্দরবান: রাতভর বাসে (৮–১০ ঘণ্টা)
  2. বান্দরবান → থানচি: চান্দের গাড়িতে (৭–৮ ঘণ্টা)
  3. থানচি → রেমাক্রি: নৌকায় (১.৫–২ ঘণ্টা)
  4. রেমাক্রি → আমিয়াখুম → সাতভাই খুম: ৫–৭ ঘণ্টা ট্রেকিং (রাত কাটিয়ে, পরদিন ভেলা ভ্রমণ)

 

🍽️ খাওয়ার ব্যবস্থা

থানচি, রেমাক্রি, বাটিপাড়ায় সীমিত খাবারের ব্যবস্থা আছে।

খাবারের ধরন:

  • স্থানীয়ভাবে রান্না করা ভাত–ডাল–সবজি–ডিম/মুরগি
  • বাঁশে রান্না করা পাহাড়ি খাবার
  • নিজস্ব শুকনো খাবার, পানি ও চকলেট সঙ্গে রাখা উচিত

🏨 আবাসনের ব্যবস্থা

  • বাটিপাড়া গ্রাম: হোমস্টে / বাঁশের কটেজ
  • আমিয়াখুম রুট: গাইডের মাধ্যমে তাঁবু বা হোমস্টে
  • থানচি / রেমাক্রি: গেস্টহাউজ ও হোমস্টে সহজলভ্য

🗺️ আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

  • আমিয়াখুম ঝরনা ও খুম
  • নাফাখুম ঝরনা
  • ভেলাখাল ঝিরিপথ
  • ওয়াচ্ছাপাড়া গ্রাম
  • বাটিপাড়া গুহা ও পাথুরে খাল

✅ ট্রেকিং টিপস

  • অনুমতি নিতে হয় – থানচি চেকপোস্টে আইডি দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন
  • অভিজ্ঞ গাইড ছাড়া যাওয়া বিপজ্জনক ও নিষিদ্ধ
  • পাথুরে ও পিচ্ছিল পথ – শক্ত গ্রিপের জুতা আবশ্যক
  • শুকনো খাবার, পানি, ফার্স্ট এইড ও টর্চ লাইট সঙ্গে রাখুন
  • প্লাস্টিক ফেলে যাবেন না – পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন
  • Power bank ও রেইনকোট সঙ্গে রাখুন

🔚 উপসংহার

সাতভাই খুম এক রোমাঞ্চপ্রিয় ভ্রমণকারীর স্বপ্নের জায়গা। গহীন অরণ্যে নীরব, স্বচ্ছ পানির খুমে ডুবে থাকা, ভেলাভ্রমণ আর পাথরের বুকে ভেসে যাওয়া যেন প্রকৃতির গোপন গহনে হারিয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি। যারা সাহস ও সাহচর্য ভালোবাসেন—তাঁদের জন্য এটি হতে পারে জীবনের এক স্মরণীয় অভিযাত্রা।

📢 পাহাড়ের বুকে, অরণ্যের গভীরে, জলধারার খুমে—যেখানে প্রকৃতি নিজের ভাষায় গল্প বলে। সেই গল্প শুনতে চলে যান সাতভাই খুমে। 🌊🌲🛶


আরও পড়ুন:
👉 আমিয়াখুম–নাফাখুম: ট্রেকিংয়ের পূর্ণ গাইড
👉 থানচি বাজার: প্রাকৃতিক ভ্রমণের প্রবেশদ্বার
👉 বাটিপাড়া ও ওয়াচ্ছাপাড়া: পাহাড়ি গ্রাম জীবনের ছোঁয়া


🔗 ভিজিট করুন 👉 munshiacademy.com – প্রকৃতির কাছাকাছি আসুন, জ্ঞানের সঙ্গে এগিয়ে যান।

https://www.munshiacademy.com/সাতভাই-খুম-ট্রেক-গাইড-বান/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *