ষাটগম্বুজ মসজিদ


🕌 ষাটগম্বুজ মসজিদ

🌿 ভূমিকা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহাসিক শহর বাগেরহাটে অবস্থিত ষাটগম্বুজ মসজিদ (Sixty Dome Mosque) শুধু স্থাপত্য নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য ও ইসলামী সংস্কৃতির এক অনন্য নিদর্শন। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী এই স্থাপনাটি ১৫শ শতাব্দীর সুলতানি স্থাপত্যকলার এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত।


📍 কোথায়

ষাটগম্বুজ মসজিদটি খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এটি বাগেরহাট শহরের প্রায় ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, খোলাপেটুয়া নদীর তীরে।


✨ কেন যাবেন

  • প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্যের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
  • ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি ঘুরে দেখতে।
  • শান্ত, ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় আবহ অনুভব করতে।
  • আলোকচিত্র, গবেষণা ও ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য আদর্শ স্থান।

🕓 কখন যাবেন

শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকে, ভ্রমণ আরামদায়ক হয়। তবে বর্ষাকালেও মসজিদ চত্বরে সবুজ সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর।


🚗 কীভাবে যাবেন (রুট – Step by Step)

  1. ঢাকা → খুলনা (বাস/ট্রেন) – ঢাকায় থেকে খুলনা পর্যন্ত গ্রিনলাইন, সোহাগ, বা হানিফ পরিবহনে যেতে পারেন (প্রায় ৭–৮ ঘণ্টা)।
  2. খুলনা → বাগেরহাট (বাস/মাইক্রো) – খুলনা থেকে বাগেরহাট যেতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা।
  3. বাগেরহাট → ষাটগম্বুজ মসজিদ – শহর থেকে অটো/রিকশা বা সিএনজি নিয়ে সরাসরি মসজিদ প্রাঙ্গণে যাওয়া যায় (ভাড়া আনুমানিক ৩০–৫০ টাকা)।

👀 কী দেখবেন

  • বিশাল লাল ইটের তৈরি ঐতিহাসিক স্থাপনা
  • ৭৭টি গম্বুজ ও ৬০টি দোচালা স্তম্ভ
  • প্রাচীন মিহরাব, খিলান ও পাথরের খোদাই
  • সুলতান খানজাহান আলীর মাজার (অল্প দূরে)
  • পাশের ছোট মসজিদ ও জাদুঘর

💰 খরচ

  • প্রবেশমূল্য: বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ২০ টাকা, বিদেশিদের জন্য ২০০ টাকা।
  • স্থানীয় পরিবহন ও খাবারসহ মোট খরচ আনুমানিক ৮০০–১২০০ টাকা (দিনভিত্তিক ভ্রমণের জন্য)।

🚌 পরিবহন

  • ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত বিলাসবহুল বাস (৳৮০০–৳১৫০০)।
  • খুলনা থেকে বাগেরহাট লোকাল বাস বা মাইক্রো (৳১০০–৳২০০)।
  • স্থানীয় অটো/রিকশা সহজলভ্য।

🍛 খাওয়ার ব্যবস্থা

বাগেরহাট শহরে রয়েছে মানসম্মত রেস্টুরেন্ট যেমন –

  • হোটেল আল রাজা,
  • সুন্দরবন হোটেল,
  • সুলতান রেস্টুরেন্ট।
    এছাড়া স্থানীয় খাবার যেমন ইলিশ, চিংড়ি, খিচুড়ি ও মিষ্টি অবশ্যই চেখে দেখতে পারেন।

☎️ যোগাযোগ

  • স্থানীয় ট্যুর গাইড ও তথ্যকেন্দ্র পাওয়া যায় মসজিদ চত্বরের কাছেই।
  • বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পর্যটন তথ্যকেন্দ্র থেকেও সহায়তা পাওয়া যায়।

🏨 আবাসন ব্যবস্থা

  • বাগেরহাট শহরে হোটেল আল রাজা, হোটেল ইকবাল, হোটেল খানজাহানসহ ভালো মানের আবাসন রয়েছে।
  • খুলনায় থাকলে সিটি ইন, হোটেল রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল, বা ক্যাসল সালাম বেছে নিতে পারেন।

🌄 দৃষ্টি আকর্ষণীয় বিষয়

  • মসজিদের ভিতরের ঠান্ডা পরিবেশ ও ধ্বনি প্রতিধ্বনি অভিজ্ঞতা।
  • মসজিদের দেয়ালে অলঙ্কৃত ইট ও নকশা।
  • মসজিদের পাশে নদীর ধারে সূর্যাস্ত দেখা অসাধারণ।

⚠️ সতর্কতা

  • মসজিদের ভেতরে জুতা পরবেন না।
  • শব্দ করে বা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না।
  • ধর্মীয় স্থানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করুন।

🧭 আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

  • খানজাহান আলীর মাজার
  • সুন্দরবন (খুলনা হয়ে যাওয়া যায়)
  • নবাব দরগাহ
  • কোদলা মঠ
  • দারুসসালাম মসজিদ

💡 টিপস

  • সকালে বা বিকেলে গেলে ফটো তুলতে ভালো আলো পাবেন।
  • স্থানীয় গাইডের সহায়তা নিলে ইতিহাস জানা সহজ হয়।
  • পানির বোতল ও ছাতা সঙ্গে রাখুন।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *