লালবাগ কেল্লা
ভূমিকা
ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত লালবাগ কেল্লা শুধু একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়, বরং এটি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্থাপত্যকলার এক অনন্য নিদর্শন। মোঘল আমলের এই অপূর্ণ দুর্গ আজও দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখানে আসে ইতিহাসের গন্ধ নিতে, স্থাপত্যের সৌন্দর্যে হারিয়ে যেতে।
কোথায়
লালবাগ কেল্লা অবস্থিত ঢাকার পুরান শহরের লালবাগ এলাকায়, বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে।
কেন যাবেন
যারা ইতিহাস, স্থাপত্য ও ঐতিহ্য ভালোবাসেন, তাদের জন্য লালবাগ কেল্লা একটি অনন্য গন্তব্য। এখানে আপনি মোঘল আমলের নির্মাণশৈলী, রাজকীয় উদ্যান, সমাধি ও মসজিদের সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করতে পারবেন।
কখন যাবেন
শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) লালবাগ কেল্লা ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। সকাল ও বিকেলবেলায় গেলে রোদ কম থাকে এবং ছবি তোলার জন্য আলোও ভালো থাকে।
কীভাবে যাবেন / রুট (Step by Step)
১️⃣ ঢাকার ভেতর থেকে:
- গুলিস্তান বা সদরঘাট থেকে সিএনজি বা রিকশায় সরাসরি লালবাগ কেল্লা।
- মেট্রোরেল (Motijheel বা Bangshal স্টেশন থেকে নেমে) অল্প দূরত্ব রিকশায়।
২️⃣ ঢাকার বাইরে থেকে:
- যে কোনো জেলা থেকে প্রথমে ঢাকায় আসতে হবে।
- গাবতলী/কমলাপুর/সায়েদাবাদ থেকে রিকশা বা সিএনজি করে লালবাগের দিকে যেতে হবে।
কী দেখবেন
- আওরঙ্গজেবের কন্যা পারিবেগমের সমাধি
- লালবাগ মসজিদ
- কেল্লার মূল ফটক ও প্রাচীর
- পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও সুসজ্জিত উদ্যান
- মিউজিয়াম, যেখানে রাখা আছে মোঘল আমলের অস্ত্র ও শিল্পকর্ম
খরচ
- প্রবেশমূল্য:
- প্রাপ্তবয়স্ক (বাংলাদেশি): ২০ টাকা
- বিদেশি পর্যটক: ১০০ টাকা
- শিক্ষার্থী: ১০ টাকা
- ক্যামেরা ও ভিডিও চার্জ আলাদা।
পরিবহন
রিকশা, সিএনজি, প্রাইভেট কার, বাস—সব মাধ্যমেই সহজে যাওয়া যায়। পুরান ঢাকার সরু গলিতে রিকশা সবচেয়ে সুবিধাজনক।
খাওয়ার ব্যবস্থা
লালবাগ কেল্লার আশেপাশে পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবারের দোকান রয়েছে—
- হাজির বিরিয়ানি
- আল রাযা হোটেল
- চায়না টাউন
- নানা রকম স্ট্রিট ফুড যেমন—ফুচকা, চটপটি, কাবাব, লাচ্ছি
যোগাযোগ
ঠিকানা: লালবাগ রোড, পুরান ঢাকা
ফোন (পুরাতত্ত্ব অধিদপ্তর): +880-2-9566222
ওয়েবসাইট: www.archaeology.gov.bd
আবাসন ব্যবস্থা
পুরান ঢাকার ভেতরে হোটেল কম, তবে কাছাকাছি এলাকায় পাওয়া যায়—
- হোটেল ৭১ (ফুলবাড়িয়া)
- হোটেল রয়েল (নিউ মার্কেট এলাকা)
- প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও (উচ্চমানের আবাসন)
দৃষ্টি আকর্ষণীয় বিষয়
- স্থাপত্যে পারস্য ও মুঘল ধাঁচের মিশ্রণ
- সূক্ষ্ম টেরাকোটা অলংকরণ
- বাগান ও ফোয়ারার নকশা
- ঐতিহাসিক আবহ ও আলোকসজ্জা
সতর্কতা
- কেল্লার ভেতরে ময়লা ফেলা নিষেধ।
- গাইড বা টিকেটবিহীন কোনো ব্যক্তির কাছে ব্যক্তিগত তথ্য দিবেন না।
- ছায়াযুক্ত স্থানে অবস্থান করুন, বিশেষ করে গরমকালে।
- ফটো তোলার সময় নিষিদ্ধ এলাকায় সতর্ক থাকুন।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
- আহসান মঞ্জিল
- বুড়িগঙ্গা নদীর ঘাট
- চকবাজার (ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বর্গ)
- হোসেনী দালান
- সদরঘাট টার্মিনাল
টিপস
- সপ্তাহের মাঝামাঝি দিন গেলে ভিড় কম থাকে।
- সকালে গেলে সূর্যের আলোয় ছবি অসাধারণ আসে।
- সাথে পানি ও হ্যাট রাখুন।
- টিকিট কাউন্টার বন্ধ হওয়ার আগে (বিকেল ৫টার মধ্যে) পৌঁছে যান।
