Raincoat Story-Akhteruzzaman Elias

রেইনকোট গল্পের ব্যাখ্যা ও সৃজনশীল প্রশ্ন

Spread the love

✴️ গল্পের নাম: রেইনকোট রেইনকোট

✍️ লেখক:আখতারুজ্জামান ইলিয়াস  আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

রেইনকোট গল্প-আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
রেইনকোট গল্প-আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

📘 পাঠ-পরিচিতি:

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রচিত ‘রেইনকোট’ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে। পরবর্তীতে এটি সংকলিত হয় লেখকের সর্বশেষ গল্পগ্রন্থ ‘জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল’ (১৯৯৭)-এ। বর্তমান পাঠ গ্রহণ করা হয়েছে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রচনাসমগ্র ১ থেকে।

গল্পটির পটভূমি মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা শহর। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে, যখন শহরে গেরিলা আক্রমণ শুরু হয়েছে, ঠিক সেই সময়কার একটি গেরিলা অভিযানের ঘটনা ঘিরে রচিত হয়েছে গল্পটি। বিশেষ করে, ঢাকা কলেজের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচালিত এক গেরিলা হামলায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার ধ্বংসের ঘটনা এবং এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়াই গল্পের মূল কাহিনি।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে তলব করে। তাদের মধ্য থেকে নুরুল হুদাআবদুস সাত্তার মৃধাকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের উপর চালানো হয় নৃশংস নির্যাতন। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান পাওয়ার জন্যই এই বর্বর নির্যাতন পরিচালিত হয়।

গল্পটির প্রধান বর্ণনাকারী নুরুল হুদা। তার জবানিতেই অধিকাংশ ঘটনা বিবৃত হয়েছে। শহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা, মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক, জীবনযাত্রার স্থবিরতা এবং এক অন্তর্লীন মানসিক যুদ্ধের চিত্র ফুটে উঠেছে তার কথার মধ্য দিয়ে।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, গেরিলা হামলার রাতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়, আর সেই বৃষ্টিভেজা পরদিন সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য নুরুল হুদা যে রেইনকোটটি পরে— সেটি ছিল তার শ্যালক মুক্তিযোদ্ধা মিন্টুর। এই রেইনকোট গল্পের নামকরণের কেন্দ্রে অবস্থান করলেও, তা কেবল এক বস্তুগত অনুষঙ্গ নয়, বরং একটি শক্তিশালী প্রতীক। এই রেইনকোট হয়ে ওঠে সাহস, আত্মত্যাগ, এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাহক। একজন সাধারণ, ভীতু প্রকৃতির মানুষ যখন মুক্তিযোদ্ধার রেইনকোট পরে, তখন তার মধ্যে যে সাহস, উষ্ণতা ও দেশপ্রেমের সঞ্চার হয়— সেটিই গল্পের গভীর ব্যঞ্জনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

‘রেইনকোট’ গল্পটি একদিকে যেমন মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতার দলিল, অন্যদিকে তেমনি এক ব্যক্তিমানুষের মানসিক রূপান্তরের বিমূর্ত রূপক হিসেবেও পাঠকের কাছে গভীর তাৎপর্য বহন করে।

 

✍️ লেখক-পরিচিতি:

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলা কথাসাহিত্যে এক অনন্যসাধারণ প্রতিভার নাম। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, গাইবান্ধা জেলার গোটিয়া গ্রামে মামাবাড়িতে। তাঁর পৈতৃক নিবাস বগুড়া শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত নারুলি গ্রামে। পিতার নাম বি.এম. ইলিয়াস, মাতার নাম মরিয়ম ইলিয়াস। তাঁর পূর্ণ নাম আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস

🎓 শিক্ষাজীবন শুরু করেন বগুড়ায়, পরে ঢাকায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে ছিলেন সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক।

📚 সাহিত্যজগতে ইলিয়াস ছিলেন গুণগত সাহিত্যচর্চার প্রতীক। তিনি লেখার সংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও জীবনজিজ্ঞাসার সূক্ষ্ম বিশ্লেষণকে প্রাধান্য দিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, রাজনীতি, দারিদ্র্য, শোষণ ও বঞ্চনার বাস্তবতা তাঁর সাহিত্যে ব্যতিক্রমধর্মী দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপিত হয়েছে।

🧠 তিনি মানুষের মনস্তত্ত্ব ও শ্রেণিচেতনার জটিলতা অনুধাবনে ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর রচনায় বাস্তববাদ, রূপক, ইতিহাস ও মানবচেতনার এক আশ্চর্য সংমিশ্রণ ঘটেছে।

📘 তাঁর প্রকাশিত গল্পগ্রন্থগুলো হলো:

  • অন্য ঘরে অন্য স্বর
  • খোয়ারি
  • দুধভাতে উৎপাত
  • দোজখের ওম
  • জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল

📖 উপন্যাস দুটি:

  • চিলেকোঠার সেপাই
  • খোয়াবনামা

📝 এছাড়া রয়েছে একটি প্রবন্ধগ্রন্থও। তাঁর গল্পসংখ্যা খুব বেশি নয়—মাত্র ২৮টি গল্প, কিন্তু প্রতিটি গল্পই পাঠকের মননে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে।

🕯️ তিনি ১৯৯৭ সালের ৪ জানুয়ারি, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

📝 শব্দার্থ ও টীকা:

🔤 শব্দ/উক্তি 📚 অর্থ/ব্যাখ্যা
জেনারেল স্টেটমেন্ট সাধারণ বিবৃতি
স্পেসিফিক ক্লাসিফিকেশন সুনির্দিষ্ট শ্রেণিকরণ
“তলব কিয়া। আভি যানা হোগা।” তলব করেছেন। এখনই যেতে হবে।
“মিসকিরিয়ান লোগ ইলেকটিরি টেরানসফার্মার তোড় দিয়া…” দুষ্কৃতিকারীরা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার উড়িয়ে দিয়েছে। ফিরে যাওয়ার সময় গ্রেনেড ছুড়েছে। গেট ভেঙে গেছে।
“ক্যায়সে?” কীভাবে?
“উও আপ হি কহ সকতা” সেটি আপনিই বলতে পারেন।
মিসক্রিয়ান্ট দুষ্কৃতকারী। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই শব্দটি মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করে বর্ণনা করতে ব্যবহার করত।
“আব্দুস সাত্তার মিরধাকা ঘর যানে হোগা…” আবদুস সাত্তার মৃধার বাসায় যেতে হবে। এখনই আসুন। কর্নেল সাহেব চলে এসেছেন। সব অধ্যাপককে ডেকেছেন।
ওয়েলডিং ওয়ার্কশপ ঝালাই কারখানা
সাবভার্সিভ অ্যাকটিভিটিজ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড। পাকিস্তান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যক্রমকে এভাবে আখ্যায়িত করত।
ক্র্যাক-ডাউনের রাত ২৫ মার্চ, ১৯৭১-এর রাত; পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর গণহত্যার রাত।
“রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইন্টার…” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রুশ শীত যেমন হিটলারকে পরাজিত করেছিল, তেমনি বাংলাদেশের বর্ষা হানাদারদের জন্য বিপজ্জনক ছিল। এক রূপক তুলনা।

 

 

📘 ২০টি জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

(তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন, পাঠ্যাংশ জানা থাকলে সরাসরি উত্তর দেওয়া যায়)

  1. ‘রেইনকোট’ গল্পের লেখকের নাম কী?
  2. গল্পের প্রধান চরিত্রটি কী পেশার সঙ্গে জড়িত?
  3. গল্পের প্রধান চরিত্র কেন বারবার রেইনকোট খোঁজে?
  4. গল্পে ‘রেইনকোট’ কীভাবে বর্ণিত হয়েছে?
  5. গল্পে কতবার রেইনকোটের উল্লেখ রয়েছে?
  6. গল্পে ‘বৃষ্টি’ কি প্রকৃত অর্থে হয়েছিল?
  7. গল্পে চরিত্রটি কোথায় যেতে চায়?
  8. গল্পের প্রেক্ষাপট কোন সময়কালকে নির্দেশ করে?
  9. গল্পের মূল চরিত্রটির নাম কী?
  10. গল্পে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বা ভয় কীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে?
  11. লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কোন ধারার লেখক হিসেবে পরিচিত?
  12. ‘রেইনকোট’ গল্পে কোন রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়েছে?
  13. রেইনকোটের রঙ কী ছিল?
  14. গল্পে রেইনকোট খুঁজে না পেয়ে চরিত্রটি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়?
  15. গল্পে ‘ভয়ের আবহ’ তৈরি হয় কেন?
  16. গল্পের ভাষার বৈশিষ্ট্য কী?
  17. গল্পে কোনো রূপক বা প্রতীকের ব্যবহার আছে কি?
  18. লেখক কী সরাসরি রাজনৈতিক সমালোচনা করেছেন?
  19. গল্পে ‘গায়েবি মামলা’ কী বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে?
  20. রেইনকোট গল্পটি প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়?

 

📗 ২০টি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

(ভাবনাভিত্তিক প্রশ্ন; পাঠ্যাংশ বুঝে উত্তর দিতে হয়)

  1. রেইনকোট চরিত্রটির মানসিক অবস্থার প্রতীক কীভাবে?
  2. গল্পে বৃষ্টি না হলেও রেইনকোটের প্রয়োজনীয়তা কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?
  3. রাষ্ট্রীয় দমননীতি চরিত্রটির জীবনে কী প্রভাব ফেলে?
  4. রেইনকোট শুধু বৃষ্টিরোধী পোশাক নয়—এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাও।
  5. লেখক সরাসরি কিছু না বলেও কীভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন?
  6. গল্পের মধ্য দিয়ে লেখক কী বার্তা দিতে চেয়েছেন?
  7. মধ্যবিত্ত মানুষের নিরাপত্তাহীনতার চিত্র কীভাবে ফুটে উঠেছে?
  8. রেইনকোট গল্পে ভয় কীভাবে প্রধান উপাদান হয়ে উঠেছে?
  9. চরিত্রটির প্রতিদিনের রুটিনে কোন অসঙ্গতি দেখা যায়?
  10. ‘রেইনকোট’ গল্পের শিরোনাম কতটা সার্থক?
  11. রাজনৈতিক সময় ও ব্যক্তিজীবনের সম্পর্ক কীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে?
  12. রেইনকোট খোঁজার প্রক্রিয়া পাঠকের মনে কী ধরণের আবেগ তৈরি করে?
  13. গল্পে “সামান্য ঘটনা”-র মধ্য দিয়ে “বড় বাস্তবতা”-র ইঙ্গিত কীভাবে এসেছে?
  14. একজন সাধারণ মানুষ কেন রাষ্ট্রকে ভয় পায়—গল্প থেকে বিশ্লেষণ করো।
  15. রেইনকোট কি কেবল রক্ষাকবচ, নাকি আত্মপ্রবঞ্চনা?
  16. গল্পের চরিত্রটি বাস্তব জীবনের কাদের প্রতিনিধিত্ব করে?
  17. গল্পে কৌতুক ও বিদ্রুপের কোন রূপ দেখা যায় কি?
  18. গল্পের শেষে পাঠকের মনে কী প্রশ্ন জাগে?
  19. একজন পাঠক হিসেবে ‘রেইনকোট’ গল্প তোমার মনে কী প্রভাব ফেলে?
  20. গল্পটি যদি বর্তমান সময়ে লেখা হতো, তবে রেইনকোট প্রতীকের পরিবর্তে আর কী হতে পারত?

 

 

📌 সারাংশ:

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রচিত ‘রেইনকোট’ গল্পটি মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকার শেষ পর্যায়ের বাস্তবতা ও মানুষের আতঙ্কময় জীবনের প্রতিচ্ছবি। গেরিলা আক্রমণের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ গল্পের মূল কাঠামো। ঢাকা কলেজের সামনে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার ধ্বংস করা হয়। এই ঘটনার জেরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কলেজ শিক্ষকদের তলব করে এবং নুরুল হুদাআবদুস সাত্তার মৃধা নামক দুজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে।

গল্পটি নুরুল হুদার জবানিতে বলা, যিনি এক ভীতু ও সাধারণ মানুষ। তাঁর শ্যালক মিন্টু একজন মুক্তিযোদ্ধা, যিনি ঘরে অনুপস্থিত। গল্পের নামচরিত্র ‘রেইনকোট’টি ছিল মিন্টুর। বৃষ্টির মধ্যে কলেজে যেতে নুরুল হুদা সেই রেইনকোট পরেন। এই রেইনকোট হয়ে ওঠে এক প্রতীক— যা তাকে সাহস, তেজ ও একটি প্রতিরোধী সত্তা ধারণ করতে সাহায্য করে। শেষে নুরুল হুদা বুঝতে পারেন, তারও কিছু করার আছে—সে শুধু ভীতু মানুষ নয়।

🎭 রূপক বিশ্লেষণ:

‘রেইনকোট’ গল্পে রূপক ব্যবহারে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মুন্সিয়ানার পরিচয় স্পষ্ট। নিচে গল্পের গুরুত্বপূর্ণ রূপক উপাদানগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:

রেইনকোট:

  • এটি কেবল একখানা জামা নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের প্রতিরোধী চেতনার প্রতীক
  • শ্যালক মিন্টু একজন গেরিলা যোদ্ধা, তাঁর রেইনকোট গায়ে দিয়ে নুরুল হুদা যেন অনিচ্ছায় একটি প্রতীকী উত্তরাধিকার বহন করেন।
  • এই রেইনকোটের ওজন যেন এক নৈতিক দায়—অন্তর্গত চেতনার জাগরণ।

🏫 ঢাকা কলেজ:

  • এটি একসময় জ্ঞান ও শিক্ষা চর্চার জায়গা ছিল, যুদ্ধের সময়ে তা দমন-পীড়নের কেন্দ্রস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
  • প্রতীকীভাবে এটি দেশের বুদ্ধিজীবীদের ওপর নির্যাতনের ইঙ্গিতবহ

💣 গেরিলা হামলা ও ট্রান্সফর্মার ধ্বংস:

  • ট্রান্সফর্মার ধ্বংস মানে শুধুই এক সামরিক আক্রমণ নয়, বরং এটি বিদ্যমান দখলদার শাসনের বিরুদ্ধেই এক বিদ্যুত্শক্তির প্রতিরূপ

🌧️ বৃষ্টি ও আবহাওয়া:

  • বৃষ্টি আবহ একটি বিষণ্ণ, নিরুদ্দেশ এবং সংকটময় পরিস্থিতিকে উপস্থাপন করে।
  • গল্পে বলা হয়, ‘রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইন্টার, আমাদের জেনারেল মনসুন’—এতে বৃষ্টিকে একটি প্রতিরোধী প্রাকৃতিক শক্তি হিসেবে রূপায়িত করা হয়েছে।

🔶 ব্যঞ্জনাময়তা:

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস তাঁর এই গল্পে সরাসরি কিছু বলেননি। সবকিছুই ইঙ্গিত ও প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।

✅ রাষ্ট্র নয়, গল্পের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ভয় প্রকাশ পেয়েছে।
✅ রাজনৈতিক দমন না বলেও দমননীতির অভিজ্ঞতা পাঠক টের পান।
✅ বৃষ্টি নেই, তবুও রেইনকোট চাই—এ এক চরম ব্যঞ্জনা

📌 এটা কেবল এক গল্প নয়, বরং একটি মানসিক প্রতিবাদ, চাপা হাহাকার, নিরাপত্তার আকুতি

✴️ এক্সাম ফোকাস: গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

বিষয় বিশ্লেষণ
প্রতীক রেইনকোট – নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষার প্রতীক
চিহ্ন রাষ্ট্রীয় ভয়ের চিহ্ন: হুলিয়া, গোয়েন্দা, ধরপাকড়
ব্যঞ্জনা রেইনকোটের খোঁজ = অবচেতনে নিরাপত্তার আকুতি
সামাজিক প্রেক্ষাপট ৭০-এর দশকের স্বৈরশাসন, নিপীড়ন, ভয়
চরিত্র নামহীন, অথচ সর্বজনীন মধ্যবিত্ত রূপক চরিত্র

নিচে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘রেইনকোট’ গল্পের উপর ভিত্তি করে উদ্দীপকসহ ৩টি সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করা হলো, এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কাঠামো অনুসরণ করে। প্রতিটিতে ⬛ উদ্দীপক ও ✳ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয়েছে।

🟥 সৃজনশীল প্রশ্ন – ১

উদ্দীপক:
রিমন প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে তার কালো রেইনকোটটা খুঁজে। বাইরে আকাশ পরিষ্কার থাকলেও সে ভাবে, “যদি হঠাৎ ঝড় আসে!” যদিও সে জানে, বৃষ্টি হবে না, তবুও ভেতরে একধরনের অজানা ভয় কাজ করে। তার স্ত্রী বলে, “তুমি নিজেই নিজের উপর সন্দেহ করো কেন?”
রিমন চুপ করে থাকে।

প্রশ্নাবলি:
ক. ‘রেইনকোট’ শব্দের আভিধানিক অর্থ লেখো।
খ. উদ্দীপকের রিমনের আচরণ ‘রেইনকোট’ গল্পের কোন দিকটির সাথে মিল খুঁজে পাও? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের ঘটনা রাষ্ট্রীয় আতঙ্ক এবং নাগরিক নিরাপত্তাহীনতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে বিশ্লেষণ করো।
ঘ. বর্তমান সমাজে ‘ভয়’ কীভাবে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়—‘রেইনকোট’ গল্পের আলোকে যুক্তি দাও।

🟥 সৃজনশীল প্রশ্ন – ২

উদ্দীপক:
ফারহানা একটি গল্প পাঠ করছিল। গল্পের নায়ক প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ভয়ে কাঁপতে থাকে—যেন কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। অথচ বাস্তবে কিছুই ঘটে না। সে জানে, কারও নজরদারিতে রয়েছে সে। এমন অবস্থায় তার প্রতিটি কাজ একরকম ভয়ের ছায়ায় মোড়ানো।

প্রশ্নাবলি:
ক. ‘ভয়’ শব্দের প্রতিশব্দ দুটি লেখো।
খ. উদ্দীপকের নায়কের মানসিক অবস্থা আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘রেইনকোট’ গল্পের সাথে কীভাবে সাযুজ্যপূর্ণ?
গ. গল্পে ‘ভয়’ ও ‘রেইনকোট’—এই দুটি উপাদান কিভাবে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপক ও মূল গল্পের প্রেক্ষাপটে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকের অধিকার কতটা সুরক্ষিত হওয়া উচিত—যুক্তিমূলক মূল্যায়ন করো।

🟥 সৃজনশীল প্রশ্ন – ৩

উদ্দীপক:
শহীদ একজন শিক্ষক। তিনি সবসময় ছাত্রদের বলেন, “ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সত্য বলতে শিখো।” কিন্তু বাস্তব জীবনে তিনি নিজে কিছু বিষয়ে মুখ খোলেন না। কারণ, তিনি জানেন—মত প্রকাশ করলেই কোনো না কোনোভাবে বিপদ আসতে পারে। একদিন তার ছেলে জিজ্ঞেস করল, “বাবা, তুমি কি ভয় পাও?”

প্রশ্নাবলি:
ক. ‘স্বাধীনতা’ শব্দের ব্যাখ্যা লেখো।
খ. উদ্দীপকের শহীদ চরিত্র ও ‘রেইনকোট’ গল্পের প্রধান চরিত্র—এই দুইজনের আচরণে কী মিল দেখতে পাও? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের ঘটনাকে ‘আত্মরক্ষার কৌশল’ হিসেবে বিশ্লেষণ করো।
ঘ. ‘রেইনকোট’ গল্পের আলোকে ভয়-নির্ভর সমাজব্যবস্থা নাগরিক মননে কী প্রভাব ফেলে—বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করো।

 

 

https://www.munshiacademy.com/রেইনকোট-গল্পের-ব্যাখ্যা/

গল্প সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিয়োগুলো ভিজিট করুন:
https://youtu.be/mitMNG7oUtA?si=gBTCgrwK5ihWtvkV
https://youtu.be/EJOuxCGDCFQ?si=DVFswc3Y-WQ2KlDx

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *