মামার বাড়ি -জসীমউদদীন

Spread the love

মামার বাড়ি – জসীমউদদীন

ধরন:  কবিতা

কবর কবিতা -জসীমউদদীন, kobor kobita-jasimuddin
ছবি: জসীমউদদীন

আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা,
ফুল তুলিতে যাই
ফুলের মালা গলায় দিয়ে
মামার বাড়ি যাই।
মামার বাড়ি পদ্মপুকুর
গলায় গলায় জল,
এপার হতে ওপার গিয়ে
নাচে ঢেউয়ের দল।
দিনে সেথায় ঘুমিয়ে থাকে
লাল শালুকের ফুল,
রাতের বেলা চাঁদের সনে
হেসে না পায় কূল।
আম-কাঁঠালের বনের ধারে
মামা-বাড়ির ঘর,
আকাশ হতে জোছনা-কুসুম
ঝরে মাথার ‘পর।
রাতের বেলা জোনাক জ্বলে
বাঁশ-বাগানের ছায়,
শিমুল গাছের শাখায় বসে
ভোরের পাখি গায়।
ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আম কুড়াতে সুখ
পাকা জামের শাখায় উঠি
রঙিন করি মুখ।
কাঁদি-ভরা খেজুর গাছে
পাকা খেজুর দোলে
ছেলেমেয়ে, আয় ছুটে যাই
মামার দেশে চলে।

 

 

🏡 মামার বাড়ি – জসীমউদ্দীনের কবিতা

প্রকাশের সাল: ১৯৩৭

 

📜 কবিতার পরিচিতি:

“মামার বাড়ি” কবিতাটি পল্লীকবি জসীমউদ্দীন রচিত একটি জনপ্রিয় কবিতা, যা বাংলা কবিতা ও শিশুসাহিত্যের অমূল্য রত্ন। কবিতাটি শৈশবের আনন্দ, গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য এবং সম্পর্কের স্নেহময়তাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে। ১৯৩৭ সালে প্রথম প্রকাশিত এই কবিতাটি আজও শিশুদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।

 

💡 কবিতার ব্যাখ্যা:

1️⃣ গ্রামীণ জীবনের চিত্র:

কবিতার শুরুতেই একটি শিশু তার মামার বাড়ি যাওয়ার আনন্দের কথা বলছে। সেখানে সে গ্রাম্য পরিবেশ উপভোগ করে—প্রকৃতির সৌন্দর্য যেমন নদী, গাছপালা, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণী। গ্রামীণ জীবনের এক সরলতা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কবিতায় ফুটে উঠেছে। শিশুটি গ্রামে গিয়ে গরু-ছাগল এবং হাঁস-মুরগি-এর সঙ্গে খেলে, যা তার জন্য এক অবিস্মরণীয় আনন্দ

 

2️⃣ মামার বাড়ির সম্পর্ক:

কবিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মামা ও আত্মীয়দের সম্পর্ক। কবি শিশুর দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের সম্পর্কের মাধুর্য এবং প্রিয়তাকে তুলে ধরেছেন। মামার বাড়ি যাওয়ার পর, শিশুটি তার মামার কাছে স্নেহ, ভালবাসা এবং আনন্দ অনুভব করে। এর মাধ্যমে শিশুর মনে নির্ভরতা এবং সম্পর্কের গভীরতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

3️⃣ বাচ্চাদের চোখে পৃথিবী:

কবিতায় শিশুদের দৃষ্টিকোণ খুবই সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শিশুর চোখে প্রকৃতির সৌন্দর্য, অন্যরকম আনন্দ এবং বিনোদন বিশেষভাবে ফুটে ওঠে। শিশুটি যখন নতুন পরিবেশে প্রবেশ করে, তখন তাকে সমস্ত কিছুই নতুন মনে হয়। মামার বাড়ি যেন তার কাছে একটি স্বপ্নময় পৃথিবী, যেখানে সে আনন্দের সাগরে ডুব দিয়ে খেলা করে।

 

🎓 শিক্ষামূল্য:

এই কবিতাটি শৈশবের স্মৃতি, সম্পর্কের মাধুর্য এবং গ্রামীণ জীবনের সরলতা শেখায়। এটি শিশুদের মধ্যে সম্পর্কের গুরুত্ব এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি করতে সহায়ক। কবিতার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, শৈশবের আনন্দ এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য মানুষের জীবনে অপরিহার্য।

 

🔚 উপসংহার:

“মামার বাড়ি” কবিতাটি জসীমউদ্দীন এর একটি অমর সৃষ্টি, যা বাংলা কবিতার জগতে বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে। এটি শৈশবের আনন্দ এবং গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলে, সম্পর্কের মাধুর্য এবং মনের পরিপূর্ণতা প্রদান করে। কবিতাটি শুধু শিশুদের জন্য নয়, বরং সকল বয়সের পাঠকদের জন্য এক মূল্যবান শিক্ষা।

 

 

 

 

 

লিংক: https://www.munshiacademy.com/মামার-বাড়ি-জসীমউদদীন/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *