উচ্চশিক্ষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সূচনা

উচ্চশিক্ষা বলতে বোঝায়—কোনও শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমিক স্তরের উপরের স্তরে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রদত্ত বিভিন্ন ধরনের উচ্চতর শিক্ষা, যার সমাপ্তিতে বিশেষ উপাধি বা সনদ প্রদান করা হয়।
যেসব প্রতিষ্ঠানে এই শিক্ষা প্রদান করা হয়, সেগুলিকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলা হয়। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় এই শ্রেণির অন্তর্গত।

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের জন্য সাধারণত মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা সমাপ্ত করা আবশ্যক। অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রায় ১৮ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করে। উচ্চশিক্ষা শেষে প্রাপ্ত ডিগ্রিকে বলা হয় উচ্চশিক্ষায়তনিক উপাধি

পেশাভিত্তিক শিক্ষা

মাধ্যমিক-স্তরের শিক্ষা শেষ করার পর অনেকেই পেশাভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে আইন, ধর্মতত্ত্ব, ব্যবসা, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সঙ্গীত, শিল্পকলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক বা ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করা হয়।
তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলা হয় না; এগুলিকে বলা হয় মাধ্যমিক-উত্তর অ-তৃতীয় স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষিপ্ত-চক্রের তৃতীয় স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এগুলির লক্ষ্য হলো চাকরি বা শ্রমবাজারে প্রবেশের জন্য ব্যবহারিক দক্ষতা ও পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান। পাঠ্যক্রম সমাপ্তির পর সনদ প্রদান করা হয়, এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সুযোগ তৈরি হয়।


উচ্চশিক্ষার স্তর

উচ্চশিক্ষা সাধারণত তিনটি স্তরে বিভক্ত—
১. স্নাতক স্তর
২. স্নাতকোত্তর স্তর
৩. ডক্টরেট স্তর

১. স্নাতক স্তর

এই স্তরে শিক্ষার্থীরা মধ্যম পর্যায়ের উচ্চশিক্ষায়তনিক বা পেশাদারী জ্ঞান, দক্ষতা ও সামর্থ্য অর্জন করে। শিক্ষাক্রম সফলভাবে সমাপ্ত করলে স্নাতক উপাধি প্রদান করা হয়।
স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা মূলত তত্ত্বনির্ভর, যা পরবর্তী গবেষণার প্রস্তুতি দেয় অথবা উচ্চতর পেশাভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে।

২. স্নাতকোত্তর স্তর

এ পর্যায়ে আরও উন্নত, গভীর ও বিশ্লেষণমূলক শিক্ষা প্রদান করা হয়। সফলভাবে সমাপ্ত করলে স্নাতকোত্তর উপাধি (যেমন এম.এ., এম.এসসি., এম.কম ইত্যাদি) প্রদান করা হয়।

৩. ডক্টরেট স্তর

উচ্চশিক্ষার তৃতীয় ও সর্বোচ্চ স্তর হলো ডক্টরেট স্তর। এটি সম্পূর্ণ গবেষণাভিত্তিক, যেখানে মৌলিক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে প্রকাশযোগ্য মানের একটি অভিসন্দর্ভ (থিসিস) প্রস্তুত করতে হয়।
গবেষণাপত্র সফলভাবে রক্ষা করতে পারলে শিক্ষার্থীকে ডক্টরেট উপাধি (Ph.D.) প্রদান করা হয়।


ব্যক্তিজীবনে উচ্চশিক্ষার অর্থনৈতিক গুরুত্ব

২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও শ্রমশক্তি বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র “দ্য কলেজ পেঅফ” (The College Payoff) নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে উচ্চশিক্ষা ও আয়ের সম্পর্ককে চারটি সাধারণ নিয়মে বিশ্লেষণ করা হয়েছে—

  1. উচ্চশিক্ষার স্তর যত উঁচু, আয় তত বেশি।
  2. পেশা নির্বাচনের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ—কিছু ক্ষেত্রে স্বল্পশিক্ষিত ব্যক্তি উচ্চ-আয়ের পেশায় কাজ করে উচ্চশিক্ষিত কিন্তু কম-আয়ের পেশার ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি উপার্জন করতে পারে।
  3. একই পেশার ক্ষেত্রেও শিক্ষার স্তর আয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  4. বর্ণ, সম্প্রদায় ও সামাজিক লিঙ্গ অনেক সময় আয় বৈষম্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

আরও দেখুন

  • শিক্ষা ব্যবস্থা
  • বিশ্ববিদ্যালয়
  • পেশাভিত্তিক শিক্ষা

তথ্যসূত্র

১. The College Payoff: Education, Occupations, Lifetime Earnings — Georgetown University, 2011.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *