পঞ্চম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন উত্তর
এই দেশ এই মানুষ প্রশ্ন উত্তর : আমাদের আছে নানা ধরনের উৎসব। মুসলমানদের রয়েছে দুটি ঈদ, ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা। হিন্দুদের দুর্গা পূজাসহ আছে নানা উৎসব আর পার্বণ। বৌদ্ধদের আছে বুদ্ধ পূর্ণিমা ও প্রবারণা পূর্ণিমা। খ্রিষ্টানদের আছে ইস্টার সানডে আর বড় দিন। এছাড়াও রয়েছে নানা উৎসব। পহেলা বৈশাখ নববর্ষের উৎসব। আবার রাখাইনদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসব রয়েছে। আমরা একে অপরের উৎসবে সহযোগিতা করি। আমাদের পোশাক-পরিচ্ছদও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের, ভিন্ন ভিন্ন ধাঁচের। মিল আমাদের একটা জায়গায় – সকলেই আমরা বাংলাদেশের অধিবাসী।
এই দেশ এই মানুষ প্রশ্ন উত্তর
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
সৌভাগ্য, প্রকৃতি, বৈচিত্র্য, বেলাভূমি, প্রান্তর, স্বজন, সার্থক, সাংরাই, বিজু।
সৌভাগ্য—ভালো ভাগ্য।
প্রকৃতি—পরিবেশ, বাইরের জগৎ।
বৈচিত্র্য—বিভিন্নতা।
বেলাভূমি—সমুদ্রের তীরে বালুময় স্থান।
প্রান্তর—মাঠ, জনবসতি নেই এমন বিস্তীর্ণ স্থান।
স্বজন—নিজের লোক, আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব।
সার্থক—সফল।
সাংরাই—রাখাইনদের নববর্ষ উৎসব।
বিজু —চাকমাদের নববর্ষ উৎসব।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
প্রকৃতি, সৌভাগ্য, বৈচিত্র্য, বেলাভূমি, প্রান্তর, সার্থক, স্বজন।
ক. আমাদের ………. যে আমরা এদেশে জন্মেছি।
খ. আমাদের দেশে রয়েছে সুন্দর ……….।
গ. কোথায় পাহাড়, কোথায় নদী, কোথায়-বা এর সমুদ্রের ……….।
ঘ. একই দেশ, একই মানুষ অথচ কত ……….।
ঙ. দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, ………., পাহাড়, সমুদ্র এইসব।
চ. দেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই ………. হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।
উত্তর : ক. সৌভাগ্য; খ. প্রকৃতি; গ. বেলাভূমি; ঘ. বৈচিত্র্য; ঙ. প্রান্তর; চ. সার্থক।
৩. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক. বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়া আর কারা বাস করে?
উত্তর : বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়াও বাস করে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, মুরং, তঞ্চঙ্গা রাজবংশী ইত্যাদি।
খ. বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের উৎসবগুলোর নাম কী?
উত্তর : বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের নানা রকম উৎসব রয়েছে। নিচে বিভিন্ন ধর্মের উৎসবের নাম উল্লেখ করা হলো :
- মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব : ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা।
- হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব : দুর্গাপূজাসহ নানা উৎসব ও পার্বণ।
- বৌদ্ধদের ধর্মীয় উৎসব : বৌদ্ধ পূর্ণিমা।
- খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব : ইস্টার সানডে, বড়দিন।
গ. বাংলাদেশের জনজীবনের বৈচিত্র্যসমূহ কী কী?
উত্তর : বাংলাদেশের জনজীবন খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ। নিচে তা তুলে ধরা হলো-
- ধর্মীয় বৈচিত্র্য—এ দেশে বসবাস করে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ইত্যাদি ধর্মের মানুষ।
- পেশাগত বৈচিত্র্য—এ দেশের একেক মানুষ একেক পেশায় নিয়োজিত। কেউ কৃষক, কেউ কুমোর, কেউ আবার কাজ করে অফিস-আদালতে।
- জাতিসত্তার বৈচিত্র্য—বাঙালি ছাড়াও এ দেশে চাকমা, মারমা, মুরং, সাঁওতালসহ নানা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন বাস করে।
- পোশাক-পরিচ্ছদের বৈচিত্র্য—এদেশের মানুষের পোশাক-আশাকেও অনেক বৈচিত্র্য দেখা যায়। কেউ পরে লুঙ্গি, কেউ শার্ট, কেউ শাড়ি, কেউ বা সালোয়ার কামিজ।
ঘ. “দেশ হলো জননীর মতো।” দেশকে জননীর সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন?
উত্তর : জননী স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা দিয়ে আমাদের আগলে রাখেন। তেমনি দেশও তার আলো-বাতাস-সম্পদ দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। এ কারণেই দেশকে জননীর সাথে তুলনা করা হয়েছে।
ঙ. জেলেরা কী কাজ করেন? তারা যদি কাজ না করেন তাহলে আমাদের কী হতে পারে?
উত্তর : জেলেরা পুকুর, নদী, খাল-বিল ইত্যাদি থেকে মাছ ধরেন। জেলেরা যদি তাঁদের কাজ না করেন তাহলে আমরা মাছ খেতে পাব না। এর ফলে আমাদের শরীরে আমিষের অভাব দেখা দেবে। তাই জেলেদের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চ. “ধর্ম যার যার, উৎসব যেন সবার।”— এ কথার দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : আমাদের দেশে সব ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে মিলে-মিশে বসবাস করছে। প্রতিটি ধর্মের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মীয় উৎসব। আমরা সবাই মিলে এ উৎসবগুলো উদ্যাপন করি। উৎসবে আনন্দ করার সময় আমরা কে কোন ধর্মের তা মনে রাখি না। এ কারণেই বলা হয়েছে “ধর্ম যার যার, উৎসব যেন সবার।”
ছ. দেশকে কেন ভালোবাসতে হবে?
উত্তর : মা আমাদের স্নেহ ও মমতা দিয়ে আগলে রাখেন। ঠিক সেভাবেই দেশও তার আলো, বাতাস, সম্পদ ইত্যাদি দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। তাই দেশ আমাদের মায়ের মতোই। মাকে আমরা যেমন ভালোবাসি দেশকেও তেমনিভাবে ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসার মাধ্যমেই আমাদের জীবন সার্থক হয়ে উঠবে।
৪. নিচের অনুচ্ছেদ অবলম্বনে ৩টি প্রশ্ন তৈরি করি।
দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র এই সব। দেশ হলো জননীর মতো। মা যেমন আমাদের স্নেহ মমতা ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখেন। দেশও তেমনই তার সম্পদ দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। এদেশকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই সার্থক হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।
উত্তর :
ক) দেশ মানে কী?
খ) দেশকে জননীর মতো বলা হয়েছে কেন?
গ) কীভাবে আমাদের জীবন সার্থক হয়ে উঠবে?
৫. বিপরীত শব্দ জেনে নিই। ফাঁকা ঘরে ঠিক শব্দ বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ক. আমাদের বাংলাদেশের বাইরেও অনেক ……. আছে।
খ. সবাই আমরা পরস্পরের …….।
গ. ……. হলো জননীর মতো।
ঘ. আমাদের ……. যে আমরা এদেশে জন্মেছি।
উত্তর : ক. বাঙালি; খ. বন্ধু; গ. দেশ; ঘ. সার্থকতা।
৬. নিচের বাক্য কয়টি পড়ি।
মনির খুব ভালো ছেলে। রবিন তার বন্ধু। মনির ও রবিন একত্রে মাঠে খেলে।
এখানে,
মনির, রবিন—বিশেষ্য পদ
খুব ভালো—বিশেষণ পদ
তার—সর্বনাম পদ
ও—অব্যয় পদ
খেলে—ক্রিয়া
এবার নিচের বাক্য কয়টি থেকে ৫ ধরনের পদ খুঁজে বের করি।
“বাংলাদেশের জনজীবন ভারি বৈচিত্র্যময়। এই দেশকে তাই ঘুরে ঘুরে দেখা দরকার। এজন্য দরকার দেশের নানা প্রান্তে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া। উচিত সবার সবাইকে ভালোবাসা।”
উত্তর :
বিশেষ্য পদ—বাংলাদেশ, দেশ, দরকার, প্রান্ত, স্বজন, বন্ধু, বাড়ি।
বিশেষণ পদ —জনজীবন, বৈচিত্র্যময়।
সর্বনাম পদ—ই, সবার, সবাইকে।
অব্যয় পদ—ও।
ক্রিয়াপদ—ঘুরে দেখা, বেড়াতে যাওয়া, ভালোবাসা।
৭. কর্ম-অনুশীলন।
ক. বাংলাদেশের যেকোনো উৎসব সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করি।
খ. শিক্ষকের নির্দেশনায় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে (৩ দিন/৪ দিন পর পর) টেলিভিশন/রেডিও/খবরের কাগজে প্রচারিত সংবাদ দেখে/শুনে/পড়ে নিচের ছক অনুযায়ী আলাদা কাগজে তা লিখে আনি। পরে শ্রেণিতে পড়ে শোনাই ও অন্যদের লেখা শুনি।
উত্তর :
ক. পয়লা বৈশাখ
পয়লা বৈশাখ বাংলাদেশের একটি জাতীয় উৎসব। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন পালন করা হয় এ উৎসব। সকল ধর্মের ও বর্ণের লোকজন উৎসবটিকে জাঁকজমকের সাথে পালন করে। দিনটি উপলক্ষ্যে পথে, ঘাটে, মাঠে বসে বাহারি মেলা। এটি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। সকলে নববর্ষের বিশেষ পোশাক পরে। ব্যবসায়ীরা হিসাব-নিকাশের নতুন খাতা খোলেন। ঘরে ঘরে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ধুম পড়ে যায়।