নির্মলেন্দু গুণ-আত্মজীবনী

Spread the love

নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম: ২১ জুন ১৯৪৫) 

নির্মলেন্দু গুণ-আত্মজীবনী
নির্মলেন্দু গুণ-আত্মজীবনী

           

বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি কবিতা, গদ্য, ভ্রমণকাহিনী এবং চিত্রকলায় সমান দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রেম, সমাজবিচার, শ্রেণীসংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধিতা প্রাধান্য পেয়েছে। নির্মলেন্দু গুণের কাব্যপ্রতিভা মূলত সহজ ভাষায় গভীর অনুভূতি প্রকাশের ক্ষমতায় প্রকাশ পেয়েছে।  তিনি প্রেম, স্বাধীনতা, সমাজচিত্র ও মানবিক বোধকে সহজবোধ্য ও হৃদয়গ্রাহী শব্দে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর কবিতায় আছে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, আবার আছে প্রেমের কোমলতা।  সাধারণ মানুষের ভাষায় অসাধারণ কথা বলা—এটাই তাঁর কবিতার বিশেষ বৈশিষ্ট্য।  তাঁর কবিতা পড়লে মনে হয়, যেন জীবনের কথা তিনি নিঃসংকোচে বলছেন পাঠকের মুখে মুখে। 🌿

🌾 জন্ম ও শৈশব

নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা উপজেলার কাশবন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নির্মলেন্দু গুণ। তাঁর পিতা সুখেন্দু প্রকাশ গুণ চৌধুরী এবং মাতা বীণাপাণি। চার বছর বয়সে মাতার মৃত্যুর পর পিতা চারুবালাকে বিয়ে করেন, যিনি গুণের শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক দীক্ষা দেন।

📚 শিক্ষা ও সাহিত্যজীবনের সূচনা

বারহাট্টা সি. কে. পি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে মেট্রিক এবং ১৯৬৪ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৬৯ সালে প্রাইভেট পরীক্ষায় বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তাঁর প্রথম কবিতা “নতুন কান্ডারী” ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

✍️ সাহিত্যকর্ম ও বৈশিষ্ট্য

নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয়, যা তাঁকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। এই গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত ‘হুলিয়া’ কবিতাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর কবিতায় প্রেম, সমাজবিচার, শ্রেণীসংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধিতা প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি মোট ৪৫টি কাব্যগ্রন্থ এবং ২০টি গদ্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।

🎨 চিত্রকলা

কবিতার পাশাপাশি নির্মলেন্দু গুণ চিত্রকলায়ও পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। ২০০৯ সালে ঢাকার শাহবাগে তাঁর একক চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

🏆 পুরস্কার ও সম্মাননা

নির্মলেন্দু গুণ তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন:

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২)

একুশে পদক (২০০১)

স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৬)

 

👨‍👧 ব্যক্তিগত জীবন

১৯৮০ সালে তিনি নীরা গুণের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের একমাত্র কন্যা মৃত্তিকা গুণ।

📖 নির্বাচিত গ্রন্থসমূহ

প্রেমাংশুর রক্ত চাই (১৯৭০)

না প্রেমিক, না বিপ্লবী (১৯৭২)

চৈত্রের ভালোবাসা (১৯৭৫)

তারা আগে চাই সমাজতন্ত্র (১৯৭৯)

মুজিবমঙ্গল (২০১২)

 

🌟 উত্তরাধিকার

নির্মলেন্দু গুণ বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য প্রতিভা, যিনি তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর কবিতা ও চিত্রকলা আজও পাঠকপ্রিয় এবং বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়।

 

https://www.munshiacademy.com/নির্মলেন্দু-গুণ-আত্মজীবন/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *