🔍 ‘দুরবিন’ কিন্তু ‘দূরবীক্ষণ’ — বানানে পার্থক্যের পেছনে ব্যাকরণগত কারণ
বাংলা ভাষায় অনেক শব্দ বানানে খুব কাছাকাছি মনে হলেও প্রকৃত অর্থে তাদের উৎস, গঠন ও বানানবিধির দিক থেকে রয়েছে মৌলিক পার্থক্য। এমনই একটি জোড়া শব্দ হলো — ‘দুরবিন’ ও ‘দূরবীক্ষণ’।
বানান: উ-কার (দু), ই-কার (বি), দন্ত্য-ন (ন)।
শব্দের উৎস: ফারসি
প্রকৃতি: অতৎসম/বিদেশি শব্দ
অর্থ: একটি যন্ত্র যার সাহায্যে দূরের জিনিসকে বড় করে দেখা যায়।
বানানরীতি:
বিদেশি বা অতৎসম শব্দে বাংলা বানানে সাধারণত ঊ-কার, ঈ-কার, মূর্ধন্য-ণ ব্যবহৃত হয় না।
‘ণত্ববিধি’ এখানে কার্যকর হয় না।
🧭 উদাহরণ:
> সে দুরবিন দিয়ে চাঁদ দেখছিল।
—
📌 ২. ‘দূরবীক্ষণ’
বানান: ঊ-কার (দূর), ঈ-কার (বীক্ষণ), মূর্ধন্য-ণ (ণ)।
শব্দের উৎস: তৎসম (সংস্কৃতমূল)
প্রকৃতি: তৎসম শব্দ
অর্থ: দূরের বস্তুকে পর্যবেক্ষণের প্রক্রিয়া বা কর্ম; বিজ্ঞানের পরিভাষা।
বানানরীতি:
তৎসম শব্দে ঊ-কার, ঈ-কার, মূর্ধন্য-ণ এবং ণত্ববিধি যথাযথভাবে অনুসৃত হয়।
উদাহরণ:
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে গবেষণা চালান।
📚 সংক্ষেপে পার্থক্যসূচক টেবিল:
দিক দুরবিন দূরবীক্ষণ
উৎস ফারসি (অতৎসম) তৎসম (সংস্কৃত)
ধ্বনি উ-কার, ই-কার, ন ঊ-কার, ঈ-কার, ণ
বানানে ণত্ববিধি প্রযোজ্য নয় প্রযোজ্য
ব্যবহার সাধারণ যন্ত্র বিজ্ঞানসম্মত পরিভাষা
✅ উপসংহার:
শব্দের উৎস জানলে বানানের সঠিক রূপ নির্ধারণ করা সহজ হয়। ‘দুরবিন’ ও ‘দূরবীক্ষণ’ — এ দুটি শব্দ বানানে ভিন্ন হলেও অর্থে ঘনিষ্ঠ; তবে তাদের উৎসগত পার্থক্য বানানে ভিন্নতা আনে।
✒️ স্মরণে রাখুন:
> তৎসম শব্দে নিয়ম কড়াকড়ি, অতৎসম বা বিদেশি শব্দে নিয়ম কিছুটা শিথিল।
‘দুরবিন’ কিন্তু ‘দূরবীক্ষণ’ — বানানে পার্থক্যের পেছনে ব্যাকরণগত কারণ