গল্পগ্রন্থ: ঠাকুরমার ঝুলি
গল্পের নাম: দুধের সাগর
লেখক: দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
প্রকাশনী: এম. রায় ও সন্স
প্রকাশকাল: ১৯২৪
ধরন: ফ্যান্টাসি, ঐতিহ্যবাহী গল্প
কবিতা: দুধের সাগর
হাজার যুগের রাজপুত্র রাজকন্যা সবে
রূপসাগরে সাঁতার দিয়ে আবার এল কবে।
* * * * * * * * * * * * * * *
শুকপঙ্খী নায়ে চড়ে’ কোন কন্যা এল’
পাল তুলে’ পাঁচ ময়ূরপঙ্খী কোথায় ডুবে, গেল,
পাঁচ রানী পাঁচ রাজার ছেলের শেষে হল কি,
কেমন দুভাই বুদ্ধু, ভূতুম, বানর পেঁচাটি!
নিঝুম ঘুমে পাথর-পুরী-কোথায় কত যুগ-
সোনার পদ্মে ফুটে’ ছিল রাজকন্যার মুখ!
রাজপুত্র দেশ বেড়াতে’ কবে গেল কে-,
কেমন করে’ ভাঙ্গল সে ঘুম কোন পরশে!
ফুটল কোথায়, পাঁশদাগাতে সাত চাঁপা, পারুল,
ছুটে এল রাজার মালী তুলতে গিয়ে ফুল,
ঝুপ্ ঝুপ্ ঝুপ্ ফুলের কলি কার কোলেতে?
হেঁটে কাঁটা উপরে কাঁটা কাদের পাপে!
রাখাল বন্ধুর মধুর বাঁশি আজকে পড়ে মনে-
পণ করে পণ ভাঙ্গল রাজা; রাখাল বন্ধুর সনে।
গা-ময় সুচ, পা-ময় সুচ-রাজার বড় জ্বালা,-
ডুব দে’ যে হলেন দাসী রানী কাঞ্চনমালা!
মনে পড়ে দুয়োরানীর টিয়ে হওয়ার কথা,
দুঃখী দুভাই মা হারা সে শীত-বসন্তের ব্যথা।
ছুটতে কোথায় রাজার হাতী পাটসিংহাসন নিয়ে;
গজমোতির উজল আলোর রাজকন্যার বিয়ে!
বিজন দেশে কোথায় যে সে ভাসানে, ভাই-বোন
পড়ল অবাক্ অতুল পুরী পরম মনোরম!
সোনার পাখি ভাঙ্গল স্বপন কবে কি গান গেয়ে-
লুকিয়ে ছিল এসব কথা ‘দুধ সাগরের’ ঢেউয়ে!
শৈল্পিক দিক:
এ কবিতায় লেখক প্রাচীন ইতিহাসের রূপকল্প ও মিথের মাধ্যমে একটি আলাদা জগত সৃষ্টি করেছেন। কবিতার ভাষার মধ্যে রয়েছে গভীরতা, রহস্য, এবং মানবিক আবেগের চিত্র। শৈল্পিকভাবে, এটি এক ধরনের কল্পনাবিলাসী রচনা, যেখানে বাস্তবতার বাইরে গিয়েও পাঠক এক নতুন জগতে প্রবেশ করেন।