ড. হুমায়ূন আহমেদ-আত্মজীবনী

Spread the love

ড. হুমায়ূন আহমেদ-আত্মজীবনী

Humayun Ahmed-হুমায়ুন আহমেদ
Humayun Ahmed-হুমায়ুন আহমেদ

ড. হুমায়ূন আহমেদ—বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি তাঁর বহুমাত্রিক সৃষ্টিশীলতা, জনপ্রিয় চরিত্রসমূহ এবং সাহিত্যিক অবদানের মাধ্যমে পাঠকের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম, নাটক, চলচ্চিত্র এবং গীতিকবিতায় তিনি সমাজের নানা দিক তুলে ধরেছেন, যা আজও পাঠক ও দর্শকদের অনুপ্রাণিত করে।

🌿 শৈশব ও পারিবারিক পটভূমি

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর পিতা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা, যিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শহীদ হন। মাতা আয়েশা ফয়েজ ছিলেন একজন গৃহিণী ও লেখিকা। হুমায়ূন আহমেদের দুই ভাই—মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব—বাংলাদেশের সাহিত্য ও বিজ্ঞান জগতে সুপরিচিত।

🎓 শিক্ষা ও পেশাগত জীবন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পলিমার রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে অধ্যাপনা করেন।

📚 সাহিত্যকর্ম ও জনপ্রিয়তা

১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস “নন্দিত নরকে” দিয়ে তিনি সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি তিন শতাধিক উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ও আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর সৃষ্ট “হিমু”, “মিসির আলি”“শুভ্র” চরিত্রগুলি পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

🎬 নাটক ও চলচ্চিত্র

হুমায়ূন আহমেদ টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণেও সাফল্য অর্জন করেন। তাঁর রচিত ও পরিচালিত নাটক “কোথাও কেউ নেই”, “আজ রবিবার”, “বহুব্রীহি” ইত্যাদি দর্শকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। চলচ্চিত্র নির্মাণে তিনি “আগুনের পরশমণি”, “শ্রাবণ মেঘের দিন”, “ঘেটুপুত্র কমলা” প্রভৃতি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন, যা সমালোচক ও দর্শকদের প্রশংসা অর্জন করে।

🎵 গীতিকবিতা ও সঙ্গীত

তিনি নিজেই তাঁর নাটক ও চলচ্চিত্রের জন্য গান রচনা করতেন। তাঁর রচিত গানগুলি যেমন “আমার আছে জল”, “চাঁদনী পসর রাতে” ইত্যাদি শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

🏆 পুরস্কার ও সম্মাননা

  • বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১)

  • একুশে পদক (১৯৯৪)

  • জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বিভিন্ন বিভাগে)

  • মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭)

  • হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০)

🌳 নুহাশ পল্লী ও ব্যক্তিগত জীবন

প্রকৃতিপ্রেমী হুমায়ূন আহমেদ গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন “নুহাশ পল্লী”, যেখানে তিনি সাহিত্যচর্চা ও বিশ্রামের জন্য সময় কাটাতেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান ও দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তাঁর সন্তানদের মধ্যে নুহাশ হুমায়ূন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে কাজ করছেন।

🕯️ মৃত্যু ও উত্তরাধিকার

২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর শেষ ঠিকানা নুহাশ পল্লী তাঁর সাহিত্যকর্ম ও সৃষ্ট চরিত্রগুলি আজও পাঠক ও দর্শকদের মাঝে জীবন্ত।

https://www.munshiacademy.com/ড-হুমায়ূন-আহমেদ-আত্মজীব/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *