খুদে বার্তা লেখার নিয়ম

Spread the love

খুদে বার্তা লেখার নিয়ম

খুদে-বার্তা-লেখার-উদাহরণ
খুদে-বার্তা-লেখার-উদাহরণ

বর্তমানে ভাবের আদান প্রদান এর ক্ষেত্রে একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র হয়ে উঠেছে খুদে বার্তা বা (SMS) শর্ট ম্যাসেজ। আপনি জানেন কি? এই খুদে বার্তা লেখার নিয়ম কানুন।

বহুকাল আগে থেকে মানুষ পরষ্পরের সাথে মনের ভাব আদান-প্রদান এর জন্য ব্যবহার করতেন সাংকেতিক ভাষার মাধ্যমে। পর্বর্তীতে মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য প্রচলন হয় ভাষার। ভাষা হয়ে উঠে ধীরে ধীরে মানুষের ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে উত্তম একটি মাধ্যম।

কিন্তু কাছে অবস্থান করা ব্যক্তির সাথে ভাবের আদান প্রদান ভাষার মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। আর সেই থেকে মানুষ পরষ্পরের সাথে মনের ভাব আদান প্রদান করার জন্য বেছে নেয়, ম্যাসেজ কিংবা ক্ষুদে বার্তা। আর তখন থেকেই প্রচলন হয়েছে ক্ষুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজের।

মানুষ সামাজিক জীব। তাই সমাজবদ্ধ হয়ে থাকার জন্য তাকে পরষ্পরের সাথে মিশতে হয়, পরষ্পরের সাথে মতবিনিময় করতে হয়। পরষ্পরের সাথে আমাদের মনের ভাবের আদান প্রদান, অথবা ব্যক্তিগত জীবন কিংবা কর্মজীবনে ভাবেন আদান প্রদান বিনিময় করে থাকি খুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজের মাধ্যমে।

খুদে বার্তার মূল বৈশিষ্ট্য:

  1. সংক্ষিপ্ততা: ৬০–৮০ শব্দের মধ্যে লিখতে হবে।

  2. সরাসরি তথ্য: কোনো ভূমিকা বা অনাবশ্যক ব্যাখ্যার দরকার নেই।

  3. সংজ্ঞা সহ প্রকারভেদ/উদাহরণ: সংজ্ঞা → প্রকারভেদ → ১–২টি উদাহরণ

  4. প্যারাগ্রাফ আকারে উপস্থাপন: গুছানো এক অনুচ্ছেদে।

  5. পরীক্ষাভিত্তিক শব্দ ব্যবহার: সহজ ভাষায়, তথ্যনির্ভর

  6. কবিতা বা ছড়া নয়, তথ্য-ভিত্তিক গদ্য ভাষা।

 

খুদে বার্তা লেখার নিয়ম

খুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে তা কিন্তু নয়। বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি অংশ হবার পাশাপাশিআমাদের কর্মজীবন, শিক্ষাজীবন কিংবা পড়াশোনার ক্ষেত্রে ও কাজে লেগে থাকে এই ক্ষুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজ। এমনকি এসএসসি কিংবা এচএসসি পরীক্ষাতেও আসে খুদে বার্তা। সুতরাং, খুদে বার্তা লেখার নিয়ম জানা থাকা আবশ্যক।

পরীক্ষার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে চলে আসে প্রায় বাংলা ব্যাকরণ বিষয়ে। যারা স্কুল কিংবা কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থী রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে বাংলা ব্যাকরণ কিংবা বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ক্ষেত্রে প্রায় যে প্রশ্নটির দেখা পাওয়া যায়, তা হল খুদে বার্তার লেখার নিয়ম নামক প্রশ্নটির।

বেশিরভাগ সময়ে এই প্রশ্নটি ঘুরে ফিরে হাজির হয় শিক্ষার্থীদের সামনে যেহেতু বিষয়টি বাংলা ব্যাকরণ তাই আপনি যদি কম কথায় প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন কিংবা নিয়ম মেনে না লেখে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার পরীক্ষার ক্ষেত্রে নম্বর কম পাবার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই চেষ্টা করবেন সবসময় বিষয়টিকে গুছিয়ে খুব সুন্দরভাবে পরীক্ষার খাতায় উপস্থাপন করার। কারণ আপনার সঠিক উপস্থাপন শৈলীর উপর আপনার পরীক্ষায় নাম্বার নির্ধারণ করা হয়।

খুদে বার্তা কি?

কথা যখন আসছে খুদেবার্তা লেখার নিয়ম সম্পর্কে, সবার আগে আপনাকে জানতে হবে যে ক্ষুদ্র বার্তা বলতে কি বুঝায়? মূলত কোন বার্তাকে কোন প্রেরকের সামনে স্বল্প ভাষায় মাধ্যমে উপস্থাপন করার কৌশলকে বলা হয়ে থাকে খুদেবার্তা বা ম্যাসেজ।সময়ের সাথে সাথে এটি হয়ে উঠেছে পরষ্পরের সাথে ভাবের আদান প্রদানের ক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার।

মূলত খুবই অল্প কথায় আপনি আপনার নিজের মনোভাব কিংবা বার্তা উপস্থাপন করার কৌশলকে  বলা হয়ে থাকে খুদেবার্তা। তবে মনে রাখবেন যে, আকার অন্যান্য বার্তা থেকে কম হতে পারে।

তবে এটি লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বেশ খানিকটা নিয়ম মেনে চলতে হবে। ঠিক কি কি কারণে আমরা কাউকে খুদে বার্তা প্রেরণ করে থাকি চলুন জেনে নেই:

  • ব্যক্তিগত জীবনে খবরাখবর নেওয়ার জন্য।
  • পরস্পরকে অভিবাদন জানানোর জন্য।
  • কাউকে  শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
  • কারো খুশিতে অংশীদার হওয়ার জন্য।
  • ভাব  বিনিময় করার জন্য।
  • মতামতের আদান প্রদানের জন্য।
  • কৌশলাদি বিনিময়।

এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরণের  কাজে আমরা পরষ্পরকে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করে থাকি।

কিন্তু আপনারা কি জানেন খুদেবার্তা প্রেরণের ক্ষেত্রে নিয়ম রয়েছে? চলুন জেনে আসা যাক একটি খুদে বার্তা লেখার নিয়ম সম্পর্কে-

  • অবশ্যই একটি বক্সের আকার করে নিতে হবে। কারণ ক্ষুদে বার্তা মোবাইল ফরম্যাটে আকারে লিখতে হবে।
  • বার্তাটি সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ টি লাইন হয়ে হতে হবে ক্ষুদে বার্তা লেখার ক্ষেত্রে।
  • পরবর্তীতে  প্রেরকের নাম লিখবেন।
  • আপনি যার কাছে বার্তা প্রেরণ করে সেই দেশের কান্ট্রি কোড যুক্ত করে মোবাইল নম্বর লিখে দিবেন।
  • সবশেষে পাঠানোর তারিখ এবং সময় উল্লেখ করে দিবেন।

এভাবেই আপনি উপরের খুদে বার্তা লেখার নিয়ম সমূহ মেনে খুব সুন্দরভাবে একটি ক্ষুদে বার্তা লেখতে পারেন।

আমি আপনাদের সুবিধার্থে নিচে একটি খুদেবার্তার নমুনা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আশা করি আপনারা নিয়মটি বুঝার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত  উদাহরণটি আপনাকে সাহায্য করবে। 

খুদে বার্তা লেখার উদাহরণ

প্রশ্ন – চাকররি অভিবাদন জানিয়ে বন্ধুকে একটি খুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজ লিখ?

প্রিয় ‘ক’

বার্তার শুরুতেই চাকরি পাওয়ার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

শুনেছি নতুন চাকরির পেয়েছিস। আশা করি জীবনের নতুন অধ্যায়ে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে ভবিষ্যতের কর্মপরিবেশে নিজের একটি শক্ত অবস্থান তুলে ধরতে পারবি। ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের সাফল্য কামনা করছি।

প্রেরক 

মিতু
+৮৮০-১৭২ …
গ্রহণ করেছেন
০৮.৩০
০৯.০৯.২০২৫

 

ব্যক্তিগত জীবনে হউক, কর্মজীবনে হউক কিংবা পড়াশোনার ক্ষেত্রে হউক আমাদের জীবনে চলার ক্ষেত্রে প্রয়োজন পরে থেকে পরষ্পরের সাথে ভাবের আদান প্রদান করে থাকা।আর আমরা পরষ্পরের সাথে খুব সহজে ভাবের আদান প্রদান করতে পারি খুদে বার্তার মাধ্যমে। অনেক সময় কাজের চাপে আমাদের ব্যক্তিগত কিংবা মানসিকভাবে যখন উদ্বিগ্ন হয়ে উঠি তখন আমাদের বন্ধু বান্ধব, পরিবার পরিজন কিংবা কাছের মানুষটির সাথে ভাবের আদান প্রদান করে থাকি খুদে বার্তা বা ম্যাসেজের মাধ্যমে।

পরষ্পরের সাথে মতবিনিময় আমাদের এই কর্মজীবনে যেমন খানিকটা প্রশান্তি যোগায়। নানা ধরণের ঝামেলা, মানুষ বিপর্যয় এ আমরা খুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজের মাধ্যমে ভাবের আদান প্রদান করে থাকি। তবে খুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজ এর মাধ্যমে আমরা শুধুমাত্র ভাবের আদান প্রদান করে থাকি তা কিন্তু নয়। বরং সময়ের সাথে এই খুদে বার্তা কিংবা ম্যাসেজ হয়ে উঠেছে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পরিশেষে

মনে রাখবেন যে, বিষয়ের উপর ক্ষুদে বার্তা লেখা হয়ে থাকুক না কেন, আপনাকে অবস্যই খুদে বার্তা লেখার নিয়ম অনুসরণ করে চলতে হবে। আশা করি আজকের আর্টিকেলে আপনারা খুদে বার্তা লেখার নিয়মটি খুব সুন্দর ভাবে বুঝে নিতে পেরেছেন। এই নিয়মসমূহ অনুসররন করে শিক্ষার্থীরা যদি পরীক্ষার আগত ক্ষুদে বার্তা লেখার নিয়ম পপ্রশ্নটির উত্তর প্রদান করে থাকে তাহলে পূরণ নাম্বার অর্জন এর ক্ষেত্রে  সম্ভাবনা রয়েছে।

https://www.munshiacademy.com/খুদে-বার্তা-লেখার-নিয়ম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *