ক্রিয়াবিশেষণ (Adverb)
সংজ্ঞা
যে শব্দ ক্রিয়া, বিশেষণ বা অন্য ক্রিয়াবিশেষণকে বিশেষিত, গুণিত, নির্দেশিত বা পরিমিত করে তাকে ক্রিয়াবিশেষণ বলে।
অর্থাৎ, “কাজ কীভাবে, কখন, কোথায়, কতটা, কোনভাবে”—এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের শব্দই ক্রিয়াবিশেষণ।
ক্রিয়াবিশেষণের বিস্তারিত বিশ্লেষণ
ক্রিয়াবিশেষণ সাধারণত বাক্যে কাজের ধরন, সময়, স্থান, পরিমাণ, কারণ ইত্যাদি স্পষ্ট করে।
প্রধান ৫ ধরনের ক্রিয়াবিশেষণ
১) রীতিবাচক ক্রিয়াবিশেষণ (Adverb of Manner)
কাজ কিভাবে হচ্ছে তা বোঝায়।
উদাহরণ: ধীরে, সুন্দরভাবে, সাবধানে, নীরবে
বাক্য:
- সে ধীরে হাঁটছে।
- তুমি সাবধানে লেখো।
২) সময়বাচক ক্রিয়াবিশেষণ (Adverb of Time)
কাজ কখন হচ্ছে বোঝায়।
উদাহরণ: আজ, এখন, পরে, তখন, সবসময়
বাক্য:
- সে আজ আসবে।
- আমি এখন পড়ছি।
৩) স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ (Adverb of Place)
কাজ কোথায় হচ্ছে বোঝায়।
উদাহরণ: এখানে, সেখানে, উপরে, নিচে
বাক্য:
- বইটি এখানে রাখো।
- সে উপরে উঠল।
৪) পরিমাণবাচক ক্রিয়াবিশেষণ (Adverb of Degree)
কাজ বা গুণের মাত্রা/পরিমাণ বোঝায়।
উদাহরণ: খুব, অনেক, যথেষ্ট, একেবারে
বাক্য:
- সে খুব দ্রুত দৌড়ায়।
- এটি যথেষ্ট ভালো।
৫) কারণবাচক ক্রিয়াবিশেষণ (Adverb of Reason)
কাজ কেন হচ্ছে বোঝায়।
উদাহরণ: তাই, এজন্য, সেজন্য
বাক্য:
- বৃষ্টি হচ্ছে, তাই যেতে পারছি না।
ক্রিয়াবিশেষণের অন্যান্য ধরন
ক. নিশ্চিতকরণসূচক (Affirmative)
হ্যাঁ, অবশ্যই
বাক্য: হ্যাঁ, আমি যাব।
খ. নাকরণ বা নিষেধসূচক (Negative)
না, কখনো নয়
বাক্য: না, আমি যাচ্ছি না।
ক্রিয়াবিশেষণের ভূমিকা
- ক্রিয়ার অর্থকে আরও স্পষ্ট করে
- সময়, স্থান, পরিমাণ ইত্যাদি নির্দিষ্ট করে
- বর্ণনাকে প্রাণবন্ত করে
- বাক্যে সুর তৈরি করে
- বিশেষণের অর্থও পরিবর্তিত করতে পারে
- খুব সুন্দর → এখানে “খুব” = ক্রিয়াবিশেষণ, “সুন্দর” = বিশেষণ
উদাহরণ বাক্য (সমন্বিত)
- সে দ্রুত দৌড়ায়। → রীতিবাচক
- আমি পরে যাব। → সময়
- তুমি বইটি সেখানে রাখো। → স্থান
- সে খুব ভালো গান গায়। → পরিমাণ
- বৃষ্টি হচ্ছিল, তাই আসিনি। → কারণ