কাশিমপুর রাজবাড়ি, রাণীনগর, নওগাঁ: ভ্রমণ প্রতিবেদন
ভূমিকা
বাংলাদেশের ইতিহাসে জমিদার ও রাজবাড়িগুলোর এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। রাজকীয় শৌর্য, স্থাপত্যশৈলী ও সংস্কৃতির নিদর্শন হিসেবে এ সব রাজবাড়ি আজও পর্যটকদের মুগ্ধ করে। নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলায় অবস্থিত কাশিমপুর রাজবাড়ি তেমনই এক ঐতিহাসিক নিদর্শন।
কোথায়
কাশিমপুর রাজবাড়ি অবস্থিত রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে, নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। এটি স্থানীয়ভাবে “কাশিমপুর জমিদার বাড়ি” নামেও পরিচিত।
কেন যাবেন
- ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হতে
- জমিদারি আমলের স্থাপত্য দেখতে
- একটি নিরিবিলি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ উপভোগ করতে
- স্থানীয় জনগণের মুখে রাজবংশের কাহিনি শুনতে
কখন যাবেন
অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তাঘাট ভালো থাকে এবং রাজবাড়ির চারপাশে সবুজের ছোঁয়া বাড়তি আকর্ষণ তৈরি করে।
কীভাবে যাবেন / রুট (স্টেপ বাই স্টেপ)
- ঢাকা থেকে প্রথমে বাস/ট্রেনে নওগাঁ জেলা শহরে পৌঁছান।
- নওগাঁ থেকে বাস বা সিএনজিতে রাণীনগর।
- রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে অটো বা মোটরসাইকেলে করে কাশিমপুর রাজবাড়িতে যাওয়া যায়।
কী দেখবেন
- রাজবাড়ির প্রধান ফটক
- লাল ইটের তৈরি পুরনো ভবন
- বিশাল খোলা উঠান
- প্রাচীন পুকুর ও মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ
- রাজবংশের স্মৃতিচিহ্ন ও অলংকারের অবশিষ্ট চিহ্ন
খরচ
- যাতায়াত খরচ (ঢাকা থেকে নওগাঁ): ৫০০–৭০০ টাকা
- স্থানীয় পরিবহন: ১০০–২০০ টাকা
- খাবার ও অন্যান্য: ৩০০–৪০০ টাকা
মোট খরচ: আনুমানিক ১০০০–১৫০০ টাকা
পরিবহন
- ঢাকা থেকে নওগাঁ পর্যন্ত নাবিল, হানিফ, শ্যামলী ও এস.আলম পরিবহনের বাস
- ট্রেনে যেতে চাইলে “পঞ্চগড় এক্সপ্রেস” বা “একতা এক্সপ্রেস”
- স্থানীয় পর্যায়ে সিএনজি, মোটরসাইকেল, অটো রিকশা সহজলভ্য
খাওয়ার ব্যবস্থা
রাণীনগর উপজেলা সদরে বেশ কয়েকটি হোটেল-রেস্তোরাঁ আছে। স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। পানি ও শুকনো খাবার সাথে রাখলে সুবিধা হবে।
যোগাযোগ
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা ইউপি অফিস থেকে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া যেতে পারে। গুগল ম্যাপে “Kashimpur Zamindar Bari” খুঁজলেই লোকেশন পাওয়া যাবে।
আবাসন ব্যবস্থা
রাত্রি যাপনের প্রয়োজন হলে নওগাঁ জেলা শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। হোটেল জয়া, হোটেল প্লাজা, হোটেল সেন্ট্রাল ইন প্রভৃতি সাশ্রয়ী দামে রুম দিয়ে থাকে।
দৃষ্টি আকর্ষণ
- স্থাপত্যের কারুকাজ
- রাজপ্রাসাদের স্তম্ভ ও গম্বুজ
- রাজবাড়ির সংলগ্ন মন্দির ও জলাশয়
- স্থানীয় ইতিহাসবেত্তাদের সংরক্ষিত তথ্য
সতর্কতা
- রাজবাড়ির ভিতরে প্রবেশের সময় ভাঙা স্থাপনার উপর না উঠা
- পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
- স্থানীয়দের অনুমতি নিয়ে ঘোরাফেরা করা ভালো
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
- রানীনগরের ঐতিহাসিক মসজিদ
- আত্রাই নদী তীর
- বাগমারা জমিদার বাড়ি (রাজশাহীর সীমানার কাছাকাছি)
- নাটোরের উত্তরা গণভবন (দিনে গেলে সময় করে দেখে নিতে পারেন)
টিপস
- সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যে ঘুরে ফিরে আসা যায়
- ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে গেলে ভ্রমণ আরও অর্থবহ হবে
- মোবাইল চার্জ ও পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখুন
- ক্যামেরা নিতে ভুলবেন না