ইসলাম শিক্ষা 🧒 তৃতীয় শ্রেণি | অধ্যায় ৩: নৈতিক ও মানবিক গুণাবলী অর্জন

Spread the love

📘 ইসলাম শিক্ষা

🧒 তৃতীয় শ্রেণি | অধ্যায় ৩: নৈতিক ও মানবিক গুণাবলী অর্জন


১। সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন (√) দাও:

ক) কোনটি নৈতিক গুণ?
১. অসহায়কে সাহায্য করা √
২. বড়োদের শ্রদ্ধা করা √
৩. অন্যের সুখে-দুঃখে সহমর্মী হওয়া √
৪. গরিবকে সাহায্য করা √

সবগুলোই সঠিক।

খ) ‘আখলাক’ শব্দের অর্থ কী?
✅ ২. চরিত্র √

গ) নৈতিক ও মানবিক গুণকে আরবিতে কী বলা হয়?
✅ ৪. আখলাকে হামিদা √

ঘ) অন্যের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করে তাকে সাহায্য করা কোন ধরনের গুণ?
✅ ৩. সহমর্মিতা √

ঙ) কোনটি উদারতা গুণের উদাহরণ?
✅ ২. অন্যের কথা ও কাজের প্রতি সহনশীল হওয়া √

ছ) দেশের উন্নয়নের জন্য যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করাকে কী বলে?
✅ ১. দেশপ্রেম √


✍️ ২। শূন্যস্থান পূরণ করো:

১. আখলাকে যামিমা ক্ষতিকর।
২. মহানবি (স.) বলেছেন, ‘আমি উত্তম চরিত্রকে পূর্ণতা দানের জন্য প্রেরিত হয়েছি’।
৩. মহানবি (স.) ইয়াতিম শিশুদের প্রতি সহমর্মী ছিলেন।
৪. মানুষকে ক্ষমা করা এবং পরোপকারী হওয়াও উদারতা
৫. দেশপ্রেম হল নিজের দেশকে ভালোবাসা।
৬. হজরত মুহাম্মদ (স.) নিজের দেশকে ভালোবাসতেন


🖍️ ৩। দাগ টেনে মিল করো:

বাম পাশের অংশ ➡️ ডান পাশের অংশ
সমাজে আমাদের কিছু নিয়ম ও নীতি ➡️ মেনে চলতে হয়।
আখলাকে যামিমার উদাহরণ হল ➡️ কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস ফেরত না দেয়া।
সহমর্মিতার উদ্দেশ্য হল ➡️ মানুষের দুঃখ-কষ্টে দরদি হওয়া।
মহানবি (স.) ভিন্ন ধর্মের লোকদের প্রতিও ➡️ উদারতা দেখিয়েছেন।
মহানবি (স.) বারবার মক্কার দিকে তাকিয়ে ➡️ হে মক্কা! আমি তোমাকে ভালোবাসি।
পড়ালেখা করা ➡️ আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

📗 ৪। শুদ্ধ/অশুদ্ধ নির্ণয় করো:

১. আখলাকে যামিমা হল আমাদের নৈতিক ও মানবিক গুণ। ❌ (অশুদ্ধ)
২. সহমর্মিতার মাধ্যমে অসহায় মানুষের সমস্যার সমাধান হয়। ✅ (শুদ্ধ)
৩. উদারতা হল অন্যের কথা, কাজ ও চিন্তা-ভাবনার প্রতি সহনশীল হওয়া। ✅ (শুদ্ধ)
৪. মাতৃভূমির উন্নয়নের জন্য নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করাই দেশপ্রেম। ✅ (শুদ্ধ)
৫. মহানবি (স.) নিজের জন্মভূমিকে ভালোবাসতেন। ✅ (শুদ্ধ)


🧠 ৫। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

ক) ধর্মীয় সম্প্রীতি কী?
উত্তর:
সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করা এবং কাউকে কষ্ট না দিয়ে একে অপরকে সাহায্য করা– এটিই ধর্মীয় সম্প্রীতি।


খ) মহানবি (স.) একজন ইহুদি মেহমানের সাথে কী আচরণ করেছেন?
উত্তর:
মহানবি (স.) ইহুদি মেহমানকে সম্মানের সাথে আপ্যায়ন করেন এবং তাঁর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেন। তিনি ধর্ম-ভেদাভেদ না করে সকল মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন।


গ) ভিন্ন ধর্মের লোকদের প্রতি তুমি কী কী সহনশীল আচরণ করবে?
উত্তর:
আমি ভিন্ন ধর্মের লোকদেরকে শ্রদ্ধা করব, তাদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াব এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করব।


ঘ) ভিন্ন ধর্মের সহপাঠীদের প্রতি তুমি কী আচরণ করবে?
উত্তর:
আমি আমার ভিন্ন ধর্মের সহপাঠীর প্রতি বন্ধুসুলভ ব্যবহার করব, তাকে পাশে বসতে দেব, খেলায় অংশ নিতে দেব এবং অসুস্থ হলে খোঁজ নেব।


ঙ) ভিন্ন ধর্মের প্রতিবেশী অসুস্থ হলে তুমি কিভাবে সহযোগিতা করবে?
উত্তর:
আমি ভিন্ন ধর্মের প্রতিবেশী অসুস্থ হলে তার খোঁজ নেব, বাসায় গিয়ে দেখে আসব এবং প্রয়োজন হলে ওষুধ বা সাহায্য দেব।


✍️ ৬। বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর


ক) ধর্মীয় সম্প্রীতি সম্পর্কে মহানবি (স.) এর আদর্শ বর্ণনা কর।
উত্তর:
মহানবি (স.) ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল আদর্শ। তিনি সকল ধর্মের মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করেছেন। মদিনায় ইহুদি ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে তিনি মদিনা সনদ প্রণয়ন করেন।

তিনি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং তাঁর সাহাবিদেরও তা শিখিয়েছেন। একবার এক ইহুদির জানাজা দেখে তিনি দাঁড়িয়ে পড়েন। যখন সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি বললেন, “সে কি মানুষ নয়?”

তিনি বলেছিলেন,
“যে অমুসলিমের ওপর জুলুম করে, আমি কিয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে বিচার চাইব।”

মহানবি (স.) অমুসলিমদের সেবা করতেন, তাদের অসুস্থতার সময় দেখতে যেতেন এবং ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দিতেন। আমরা যদি তাঁর আদর্শ অনুসরণ করি, তাহলে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় থাকবে।


খ) ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে সহনশীল আচরণের তালিকা কর।
উত্তর:
ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সঙ্গে সহনশীল আচরণ করতে হলে আমাদের নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে—

  • ➤ সব ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা
  • ➤ নম্র ভাষায় কথা বলা ও সদ্ব্যবহার করা
  • ➤ ধর্মীয় মতভেদ নিয়ে ঝগড়া না করা
  • ➤ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সহমর্মিতা দেখানো
  • ➤ অসহায় অমুসলিমদের সাহায্য করা
  • ➤ প্রতিবেশীর বিপদে পাশে দাঁড়ানো
  • ➤ ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা ও সৌহার্দ্য রক্ষা করা
  • ➤ ব্যবসা-বাণিজ্যে সৎ থাকা
  • ➤ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখা
  • ➤ ঘৃণা ও হিংসা না করে ভালবাসা ছড়ানো

☘️ এই আচরণগুলো অনুসরণ করলে সমাজে শান্তি, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে উঠবে।


🔚 শেষ কথা:
ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। মহানবি (স.) এর আদর্শ অনুসরণ করে আমরা যদি সহানুভূতি, শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলি— তবে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।


ইসলাম শিক্ষা 🧒 তৃতীয় শ্রেণি | অধ্যায় ৩: নৈতিক ও মানবিক গুণাবলী অর্জন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *