ইসলাম শিক্ষা ✨ ৩য় শ্রেণি | ৪র্থ অধ্যায়: ধর্মীয় সম্প্রীতি

Spread the love

📘 ইসলাম শিক্ষা

✨ ৩য় শ্রেণি | ৪র্থ অধ্যায়: ধর্মীয় সম্প্রীতি


১। সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন (✔️) দাও:

ক) আমাদের চারপাশে ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকাকে কী বলে?
১. সামাজিক সম্প্রীতি
✔️ ২. ধর্মীয় সম্প্রীতি
৩. রাষ্ট্রীয় সম্প্রীতি
৪. রাজনৈতিক সম্প্রীতি

খ) ‘মদিনা সনদ’ কে প্রণয়ন করেন?
✔️ ১. হজরত মুহাম্মদ (স.)
২. হজরত উসমান (রা.)
৩. হজরত আবু বকর (রা.)
৪. হজরত উমর (রা.)

গ) “আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না”—এ কথা কে বলেছেন?
✔️ ১. মহান আল্লাহ
২. হজরত আদম (আ.)
৩. হজরত মুসা (আ.)
৪. হজরত ঈসা (আ.)

ঘ) “আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি”—এই বাণী অনুযায়ী কোন ধর্মের লোক সম্মানিত?
✔️ ১. সকল ধর্মের
২. ইসলাম ধর্মের
৩. খ্রিস্টান ধর্মের
৪. বৌদ্ধ ধর্মের

ঙ) “অমুসলিমদের কারণে ভূমি অপবিত্র হয় না”—এ কথা কে বলেছেন?
✔️ ২. হজরত মুহাম্মদ (স.)


📝 ২। শূন্যস্থান পূরণ করো:

১. মহানবি (স.) মদিনায় বিভিন্ন ধর্মের লোকদের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
২. পবিত্র কুরআনে ভিন্ন ধর্মের উপাস্যকে গালি দিতে বারণ করা হয়েছে।
৩. মানুষ হিসেবে সব ধর্মের লোক সম্মানিত
৪. অভাবী, ক্ষুধার্ত বা বিপদগ্রস্ত মানুষ যে ধর্মেরই হোক, তাকে সহযোগিতা করতে হয়।
৫. হজরত উমর (রা.) এক ইহুদি বৃদ্ধকে ভিক্ষা করতে দেখে সাহায্য করেন।


🔗 ৩। দাগ টেনে মিল করো:

বাম পাশের অংশ ডান পাশের অংশ
সমাজ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রয়োজন।
প্রতিবেশী যে ধর্মেরই হোক তাঁকে সহযোগিতা করা আমাদের কর্তব্য।
আমরা আমাদের প্রতিবেশী অন্য ধর্মের মানুষদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবো।
আমাদের মহানবী (স.) অমুসলিম রোগীদের দেখতে যেতেন ও সেবা করতেন।
হজরত আবদুল্লাহ্ (রা.) এর ঘরে খাবার রান্না হলে তিনি তাঁর ইহুদি প্রতিবেশীর ঘরে খাবার পাঠাতেন।

৪। শুদ্ধ/অশুদ্ধ নির্ণয় করো:

ক. সমাজের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রয়োজন নেই। – ❌ (অশুদ্ধ)
খ. মদিনায় ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাকারী সনদের নাম ‘মদিনা সনদ’। – ✅ (শুদ্ধ)
গ. ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সহনশীল আচরণ করা আবশ্যক। – ✅ (শুদ্ধ)
ঘ. ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য ইসলাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। – ✅ (শুদ্ধ)
ঙ. ভিন্ন ধর্মের অভাবী সহপাঠীদের সহায়তা করলে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। – ✅ (শুদ্ধ)


🖋️ ৫। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:

ক. ধর্মীয় সম্প্রীতি কী?
উত্তর: সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একসাথে বসবাস করা এবং কারো ক্ষতি না করে একে অপরকে সাহায্য করাই ধর্মীয় সম্প্রীতি।

খ. মহানবি (স.) একজন ইহুদি মেহমানের সাথে কী আচরণ করেছেন?
উত্তর: মহানবি (স.) ইহুদি মেহমানকে সম্মানিতভাবে আপ্যায়ন করেছিলেন এবং তাঁর প্রতি সদয় আচরণ করেছিলেন।

গ. ভিন্ন ধর্মের লোকদের প্রতি তুমি কী কী সহনশীল আচরণ করবে?
উত্তর: আমি ভিন্ন ধর্মের লোকদেরকে শ্রদ্ধা করব, তাদের বিপদে-আপদে এগিয়ে আসব এবং তাদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করব।

ঘ. ভিন্ন ধর্মের সহপাঠীদের প্রতি তুমি কী আচরণ করবে?
উত্তর: ভিন্ন ধর্মের সহপাঠীদের সঙ্গে আমি বন্ধুসুলভ আচরণ করব, তাদের পাশে বসতে দেব, খেলায় অংশ নিতে নেব এবং অসুস্থ হলে খোঁজ নেব।

ঙ. ভিন্ন ধর্মের প্রতিবেশী অসুস্থ হলে তুমি কিভাবে সহযোগিতা করবে?
উত্তর: ভিন্ন ধর্মের প্রতিবেশী অসুস্থ হলে আমি তাকে দেখতে যাব, খোঁজখবর নেব এবং প্রয়োজন হলে ওষুধ বা সাহায্য নিয়ে এগিয়ে যাব।


📝 ৬। বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর:

ক. ধর্মীয় সম্প্রীতি সম্পর্কে মহানবি (স.)-এর আদর্শ বর্ণনা কর।
উত্তর:
মহানবি হজরত মুহাম্মদ (স.) আমাদের শেখিয়েছেন কীভাবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সহনশীলভাবে থাকতে হয়। তিনি মদিনা সনদ প্রণয়ন করে ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আদর্শ স্থাপন করেন।

তিনি বলতেন, “যে একজন অমুসলিমের ওপর জুলুম করে, কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে বিচার চাইব।” একবার এক ইহুদির জানাজা দেখে তিনি দাঁড়িয়ে পড়েন। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “সে কি মানুষ নয়?”

এ থেকে বোঝা যায়, মহানবি (স.) সব ধর্মের মানুষকে সম্মান করতেন। তিনি অন্য ধর্মের মানুষের অসুস্থতায় তাদের দেখতে যেতেন এবং সেবা করতেন।

আমরাও মহানবির (স.) মতো ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সদাচরণ করব, সহানুভূতিশীল হব এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখব।


খ. ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে সহনশীল আচরণের তালিকা কর।
উত্তর:
ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে সহনশীল আচরণ করার জন্য আমরা নিচের কাজগুলো করতে পারি—

  • ✨ তাদের ধর্ম ও বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করা
  • 🤝 নম্র ও ভদ্রভাবে কথা বলা
  • 🚫 বিতর্ক না করে সৌহার্দ্য বজায় রাখা
  • 🕊️ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকারকে সম্মান করা
  • 🎉 ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সহমর্মিতা দেখানো
  • 🆘 অসহায় বা বিপদে পড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাহায্য করা
  • 👨‍👩‍👧‍👦 ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা
  • ⚖️ ন্যায়বিচার বজায় রেখে সামাজিক সম্পর্ক রাখা
  • 🤗 শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখা
  • ❤️ ঘৃণা-বিদ্বেষ দূর করে ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলা

📌 এই শিক্ষাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়— সব মানুষ এক আল্লাহর সৃষ্টি। ধর্ম ভিন্ন হলেও ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সম্মান থাকা উচিত সবার প্রতি।

🌟 তাই আমরা সবাই মিলে একটি শান্তিপূর্ণ, ভালোবাসাময় সমাজ গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ!

🌟 উপসংহার (শিশুদের জন্য সহজ ভাষায়):

আমরা সবাই এক আল্লাহর সৃষ্টি। কারো ধর্ম ভিন্ন হলেও, সবার প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান রাখা উচিত। ধর্মীয় সম্প্রীতি মানে হচ্ছে একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, ভালো ব্যবহার করা এবং শান্তিপূর্ণভাবে একসাথে বসবাস করা। মহানবি হজরত মুহাম্মদ (স.) আমাদের এই সুন্দর শিক্ষাই দিয়েছেন।


📚 মনে রাখবে:
“তোমার প্রতিবেশী যদি অমুসলিমও হয়, তবুও তাকে ভালোবাসো, তার সাহায্য করো।”


 

ইসলাম শিক্ষা ✨ ৩য় শ্রেণি | ৪র্থ অধ্যায়: ধর্মীয় সম্প্রীতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *