✍️ আবু হেনা মোস্তফা কামাল : জীবনী ও সাহিত্যকর্ম
আবু হেনা মোস্তফা কামাল (১৩ মার্চ, ১৯৩৬ – ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯) ছিলেন বাংলাদেশের এক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কবি ও সাহিত্যিক। তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ভাষা ও সাহিত্যে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক (১৯৮৭) এবং সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১) পান।
📘 জীবন ও শিক্ষা
আবু হেনা মোস্তফা কামাল ১৯৩৬ সালের ১৩ মার্চ সিরাজগঞ্জের নাগরৌহা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৫২ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বিএ (অনার্স) ও ১৯৫৯ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন—উভয় পরীক্ষায়ই তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “The Bengali Press and Literary Writing (1818–1831)” শীর্ষক গবেষণার মাধ্যমে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
🖋️ সাহিত্যকর্ম ও অবদান
তিনি ছিলেন একাধারে কবি, প্রবন্ধকার, গবেষক ও সংগীতপ্রেমী। তাঁর কবিতা, গান ও সমালোচনামূলক রচনায় গভীর মানবপ্রেম, দেশপ্রেম ও শিল্পবোধ প্রকাশ পেয়েছে।
জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে—
“তুমি যে আমার কবিতা”, “অনেক বৃষ্টি ঝরে”, “অপমানে তুমি জ্বলে উঠেছিলে সেদিন বর্ণমালা” বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
📚 প্রধান গ্রন্থাবলি
কাব্যগ্রন্থ:
- আপন যৌবন বৈরী (১৯৭৪)
- যেহেতু জন্মান্ধ (১৯৮৪)
- আক্রান্ত গজল (১৯৮৮)
প্রবন্ধ ও গবেষণা:
- শিল্পীর রূপান্তর (১৯৭৫)
- The Bengali Press and Literary Writing (১৯৭৭)
- কথা ও কবিতা (১৯৮১)
🏆 পুরস্কার ও সম্মাননা
- আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫)
- সুহৃদ সাহিত্য স্বর্ণপদক (১৯৮৬)
- একুশে পদক (১৯৮৭)
- আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ স্বর্ণপদক (১৯৮৯)
- সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১)
🕊️ মৃত্যু ও উত্তরসূরি
১৯৮৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর পুত্র সুজিত মোস্তফা একজন বিশিষ্ট নজরুলসংগীত শিল্পী, গবেষক ও সংগঠক।
🪶 উপসংহার
আবু হেনা মোস্তফা কামাল ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি কবিতা, প্রবন্ধ ও গবেষণার মাধ্যমে সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর চিন্তা, মানবিক বোধ ও সাহিত্যনিষ্ঠা বাংলা সংস্কৃতির অমূল্য সম্পদ।
