🧑🏫 আবুল কালাম শামসুদ্দীন : জীবন, কর্ম ও অবদান
🎂 জন্ম ও পরিচয়
পূর্ণ নাম: আবুল কালাম শামসুদ্দীন
জন্ম: ৩ নভেম্বর ১৮৯৭, ধানীখোলা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু: ৪ মার্চ ১৯৭৮ (বয়স ৮০ বছর)
জাতীয়তা: বাংলাদেশী
পরিচিতি: ভাষাসৈনিক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ
পুরস্কার:
🏅 বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭০)
🏅 একুশে পদক (১৯৭৬)
❌ সিতারা-ই-খিদমত (১৯৬১) ও সিতারা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬৭) – পরবর্তীতে প্রত্যাহার করেন
—
📘 প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা
১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন
কলকাতার রিপন কলেজে (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) বিএ শ্রেণীতে ভর্তি হন
কিন্তু ১৯২০-২১ সালে খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তাতে অংশ নেন
পরবর্তীতে গৌড়ীয় সুবর্ণ বিদ্যায়তন থেকে ১৯২১ সালে ‘উপাধি’ পরীক্ষা পাস করেন
—
📰 সাংবাদিকতা জীবন
১৯২৩ সালে দৈনিক মোহাম্মদী পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু
সম্পাদনা করেন:
সাপ্তাহিক মোসলেম জগৎ
দি মুসলমান
দৈনিক সোলতান
মাসিক মোহাম্মদী
১৯৩৬ সালে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় যোগ দিয়ে ১৯৪০–১৯৬২ সাল পর্যন্ত প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন
১৯৬৪ সালে দৈনিক পাকিস্তান-এর সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৯৭২ সালে অবসর গ্রহণ করেন
সভাপতি ছিলেন: পূর্ব পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি, কলকাতা (১৯৪০)
—
🏛️ রাজনৈতিক ভূমিকা
ছাত্রজীবনে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন
পরিণত বয়সে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধাচরণ করেন
সক্রিয়ভাবে অংশ নেন ভাষা আন্দোলনে
ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য
—
🗣️ ভাষা আন্দোলনে অবদান
তাঁর সম্পাদিত দৈনিক আজাদ পত্রিকা ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
২১ ফেব্রুয়ারির গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে আইনসভার সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন
২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ – ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে প্রথম নির্মিত শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন তিনিই
—
✍️ সাহিত্যকর্ম
আবুল কালাম শামসুদ্দীন ছিলেন একজন শক্তিমান লেখক। তার রচনায় ইতিহাস, রাজনীতি ও সমাজচিত্রের সুস্পষ্ট ছাপ দেখা যায়।
📚 গ্রন্থাবলী:
কচিপাতা
অনাবাদী জমি
ত্রিস্রোতা
খরতরঙ্গ
ইলিয়ড (অনুবাদ)
পলাশী থেকে পাকিস্তান
অতীত দিনের স্মৃতি (আত্মজীবনীমূলক)
—
🏆 পুরস্কার ও স্বীকৃতি
🏅 পুরস্কার 🗓️ সাল
সিতারা-ই-খিদমত ১৯৬১
সিতারা-ই-ইমতিয়াজ ১৯৬৭
বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৭০
একুশে পদক ১৯৭৬
➡️ তিনি ১৯৬৯ সালে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সিতারা খেতাব বর্জন করেন
—
🔚 উপসংহার
আবুল কালাম শামসুদ্দীন ছিলেন একাধিক পরিচয়ের অধিকারী—সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক ও সাহিত্যিক। ভাষা আন্দোলনে তাঁর ত্যাগ, সাংবাদিকতায় তাঁর প্রজ্ঞা এবং সাহিত্যে তাঁর অবদান জাতির ইতিহাসে গর্বের অংশ হয়ে থাকবে। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি চিরকাল প্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত হবেন।
—
📝 সংক্ষিপ্ত তথ্যসারণি:
বিষয় তথ্য
জন্ম ৩ নভেম্বর ১৮৯৭
মৃত্যু ৪ মার্চ ১৯৭৮
জন্মস্থান ধানীখোলা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ
পরিচিতি ভাষাসৈনিক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক
বিখ্যাত পত্রিকা দৈনিক আজাদ
শহিদ মিনার উদ্বোধন ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ পলাশী থেকে পাকিস্তান, ত্রিস্রোতা
—
📌 উৎস: বাংলা উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র