পরমাণু কী?

মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষা করে। যাকে বিশ্লেষিত করলে আরো ক্ষুদ্রতম কণা ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন পাওয়া যায়। পরমাণুকে দুটি ভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা যায়। একটিকে কেন্দ্র বলা হয়- যে অংশে পরমাণুর সকল ভর ও ধনাত্বক চার্জ পুঞ্জীভূত থাকে। অর্থাৎ নিরপেক্ষ নিউট্রন ও ধনাত্বক প্রোটন একত্রে কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসে থাকে আর দ্বিতীয়টিকে বলা হয় বহিঃঅঞ্চল- যে অংশে নির্দিষ্ট শক্তির কতক শক্তিস্তর থাকে আর ঐ শক্তিস্তরে নির্দিষ্ট শক্তির ঋণাত্বক চার্জ যুক্ত ইলেক্ট্রন পরিক্রমণরত অবস্থায় থাকে।


পরমাণু কী?

উত্তর: পরমাণু হলো কোনো মৌলের সবচেয়ে ক্ষুদ্র কণা, যা সেই মৌলের সব বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে। অর্থাৎ পরমাণু হল পদার্থের মৌলিক একক


বিস্তারিত ব্যাখ্যা

পরমাণুর ধারণা

পৃথিবীর সবকিছু—ঠोस, তরল, গ্যাস—সবই অসংখ্য ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত। এই ক্ষুদ্রতম কণাকে বলা হয় পরমাণু (Atom)
পরমাণু এতই ছোট যে খালি চোখে, এমনকি শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপেও সাধারণত দেখা যায় না।


পরমাণুর গঠন

একটি পরমাণু তিন ধরনের উপ-কণা দিয়ে তৈরি—

  1. ইলেকট্রন (Electron) – ঋণাত্মক চার্জযুক্ত
  2. প্রোটন (Proton) – ধনাত্মক চার্জযুক্ত
  3. নিউট্রন (Neutron) – কোনো চার্জ নেই (নিরপেক্ষ)

(ক) নিউক্লিয়াস (Nucleus)

  • পরমাণুর কেন্দ্রীয় অংশকে নিউক্লিয়াস বলে।
  • এতে প্রোটন ও নিউট্রন থাকে।
  • নিউক্লিয়াস খুব ঘন এবং ভারী অংশ।

(খ) ইলেকট্রন স্তর/কক্ষপথ

  • প্রোটন-নিউট্রনকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রনগুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরে।
  • এগুলোকে শক্তিস্তর বা Energy Level বলা হয়।

পরমাণু কেন গুরুত্বপূর্ণ?

  • সব পদার্থ—লোহা, পানি, অক্সিজেন, কার্বন—সবই বিভিন্ন ধরনের পরমাণু দিয়ে গঠিত।
  • পরমাণু ভিন্নভাবে মিলিত হলে নতুন পদার্থ তৈরি হয়। যেমন—
    • ২টি হাইড্রোজেন + ১টি অক্সিজেন = পানি (H₂O)
  • রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান—প্রায় সব বিজ্ঞানের ভিত্তি হলো পরমাণু।

পরমাণুর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য

  • অত্যন্ত ক্ষুদ্র: এক মিলিমিটারের মধ্যে প্রায় ১ কোটি পরমাণু ধরে।
  • অধিবৈদ্যুতিক নিরপেক্ষ: একটি পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান হলে সেটি নিরপেক্ষ হয়।
  • মৌলের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে: কোন মৌল কোনটি হবে—তা নির্ভর করে নিউক্লিয়াসের প্রোটনের সংখ্যা (যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে)।

যেমন—

  • ১ প্রোটন = হাইড্রোজেন
  • ৬ প্রোটন = কার্বন
  • ৮ প্রোটন = অক্সিজেন

সহজ উদাহরণ

  • লোহা তৈরি লোহার পরমাণু দিয়ে
  • পানি তৈরি হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণু দিয়ে
  • লবণ তৈরি সোডিয়াম ও ক্লোরিন পরমাণু দিয়ে

অর্থাৎ পরমাণু না থাকলে কোনো পদার্থই থাকবে না

পরমাণু হলো কোনো মৌলের অত্যন্ত ক্ষুদ্রতম কণা, যা সেই মৌলের সব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। এটি প্রোটন ও নিউট্রনসমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াস এবং ইলেকট্রনবেষ্টিত শক্তিস্তর দিয়ে গঠিত। পৃথিবীর সব পদার্থই বিভিন্ন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *