উত্তর: পদার্থবিজ্ঞানের জনক হিসেবে সাধারণত স্যার আইজ্যাক নিউটন-কে গণ্য করা হয়।
বিস্তারিত আলোচনা
১. নিউটনকে ‘পদার্থবিজ্ঞানের জনক’ বলা হয় কেন?
স্যার আইজ্যাক নিউটন (Sir Isaac Newton; ১৬৪৩–১৭২৭) আধুনিক বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক বিপ্লব ঘটান। তাঁর গবেষণা ও আবিষ্কার শুধু পদার্থবিজ্ঞান নয়, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও প্রকৌশল—প্রায় সব বিজ্ঞানশাখায় অসাধারণ অবদান রাখে। পদার্থবিজ্ঞানের মূল ভিত্তি দাঁড়িয়ে আছে তাঁর গতি সম্পর্কিত সূত্র ও মহাকর্ষ সূত্রের উপর।
২. নিউটনের প্রধান অবদান
(ক) গতি সম্পর্কিত তিনটি সূত্র (Newton’s Laws of Motion)
মানব সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোর একটি হলো এই তিনটি সূত্র।
এগুলো—
- ১ম সূত্র: জড়তার সূত্র
- ২য় সূত্র: ভর, ত্বরণ ও বলের সম্পর্ক
- ৩য় সূত্র: প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে
এই সূত্রগুলো ভিত্তি করে আধুনিক মেকানিক্স বা গতি-বিজ্ঞান তৈরি হয়েছে।
(খ) মহাকর্ষ সূত্র (Law of Universal Gravitation)
নিউটন প্রথম প্রমাণ করেন যে পৃথিবীতে আপেল পড়ে যেভাবে, আকাশের গ্রহ-উপগ্রহও একই মহাকর্ষীয় শক্তির অধীনে আবর্তিত হয়।
এটি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একতা নির্দেশ করে—একই নিয়ম পৃথিবী ও আকাশে কাজ করে।
(গ) অপটিক্সে অবদান
নিউটন প্রমাণ করেন যে
- সাদা আলো ৭টি রঙের সমন্বয়ে গঠিত
- আলোর বর্ণালি বিশ্লেষণ
- প্রতিফলক দূরবীন (Reflecting Telescope) নির্মাণ
এগুলো অপটিক্স (আলোকবিজ্ঞান) ক্ষেত্রে বড় অবদান।
(ঘ) গণিতে অবদান
তিনি লাইবনিজের সঙ্গে সমান্তরালে ক্যালকুলাস (Calculus) উদ্ভাবন করেন, যা আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ভিত্তি।
৩. আধুনিক যুগে নিউটনের গুরুত্ব
নিউটনের কাজ ছাড়া—
- আধুনিক প্রকৌশল
- মহাকাশ বিজ্ঞান
- মেকানিক্স
- কম্পিউটার সিমুলেশন
- ইঞ্জিনিয়ারিং
—এইসব ক্ষেত্রের জন্মই সম্ভব হতো না। তাঁর সূত্রগুলো আজও স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির ভিত্তিমূল হিসেবে পড়ানো হয়।
৪. তাঁকে কেন ‘আধুনিক বিজ্ঞানের জনক’ও বলা হয়?
কারণ নিউটনের গবেষণা Scientific Revolution–এর চূড়ান্ত সফলতা। তিনি যুক্তি, গণনা ও পরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানের পদ্ধতিকে নতুন দিশা দেন। এজন্য তাঁকে শুধু পদার্থবিজ্ঞানেরই নয়—
“আধুনিক বিজ্ঞানের জনক” — বলেও উল্লেখ করা হয়।
